হত্যা, ধর্ষণ, সহিংসতা, নারী নির্যাতন চলছেই
যৌতুক নিয়ে কলহ চলছিল। একপর্যায়ে স্বামী আল-আমিন নিজের মোটরসাইকেল থেকে পেট্রল নিয়ে স্ত্রী শাহিদা আক্তারের (২৬) গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পাশে ছিল তাঁদের দুই বছর বয়সী মেয়ে আলিফা। সে দগ্ধ হয়। আগুন লেগে যায় আল-আমিনের গায়েও।
ঘটনাটি ঘটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায়, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর। আগুনে দগ্ধ তিনজনকে আনা হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার ১৩ ঘণ্টা পর শাহিদা মারা যান। আল-আমিন এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে।
আলিফা ছাড়াও শাহিদার আরেকটি ছেলেসন্তান রয়েছে। দুই সন্তান বড় হচ্ছে মাকে ছাড়া। শাহিদার বড় ভাই মো. জাবেদ মুন্সি গত ৩০ মার্চ প্রথম আলোকে বলেন, আল-আমিনের পরিবার শাহিদার দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছে। শিশু দুটি কেমন আছে, সেটা তাঁরা জানতে পারছেন না।
নারী নির্যাতনের বহু ঘটনার একটি হলো শাহিদার মৃত্যু। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুসারে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত বছর সারা দেশে শুধু থানায় ১৮ হাজার ৯৪১টি মামলা হয়েছে। আদালতেও মামলা হয়। নারী নির্যাতনের মামলা নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের মতে, থানায় যত মামলা হয়, তার প্রায় ১০ শতাংশের সমপরিমাণ হয় আদালতে। ফলে ২০২৩ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হওয়া মামলার সংখ্যা ২০ হাজারের কম হবে না।
২০ হাজার মামলা একটি সংখ্যা মাত্র। কিন্তু ভুক্তভোগী নারী, তাঁর সন্তান, তাঁর মা-বাবা, তাঁর স্বজনের কাছে নির্যাতনের ক্ষত উপশমযোগ্য নয়। তাঁদের বেদনা বয়ে বেড়াতে হয়, বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফেরে তাঁদের ভোগান্তি বাড়ে, থেকে যায় আক্ষেপ। একসময় অনেকে বিচারের আশাও ছেড়ে দেন।