বিসিএস পাস করেও কেন তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন না
বাংলাদেশে চাকরি এখন সোনার হরিণ। বেসরকারি খাতে চাকরির বাজার মন্দা হওয়ায় অধিকাংশ মেধাবী তরুণ সরকারি চাকরির জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন। পরীক্ষার নাম বিসিএস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট শেষ হওয়ার আগেই অনেক শিক্ষার্থী বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে গেলে দেখা যাবে, শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্লাসের পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
একজন শিক্ষাবিদ খেদের সঙ্গে বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন আর নিজ নিজ বিষয়ের পড়া পড়েন না। স্নাতক পাস করার পর তারা সমস্ত মেধা ও শক্তি ব্যয় করেন বিসিএস পরীক্ষার জন্য।
এ জন্য শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি দোষ দেওয়া যায় না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি অনিশ্চিত। অনেক ক্ষেত্রে টার্গেট ঠিক করে দেওয়া হয়, পূরণ করতে না পারলে চাকরি হারাতে হয়।
পিএসসি পরিকল্পনা নিয়েছিল বছরে একটি বিসিএস পরীক্ষা শেষ করবে, যাতে চাকরিপ্রার্থীরা দ্রুত পদায়ন পেতে পারেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
বিসিএস পরীক্ষার প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ। প্রথমে পরীক্ষার্থীদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিতে হয়। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষায় যাঁরা উত্তীর্ণ হন, তাঁদের মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়। সব প্রক্রিয়া শেষ করে যাঁরা চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন, তাঁরাই ক্যাডার সার্ভিসে প্রবেশ করার সুযোগ পান।
সাধারণত বিসিএস প্রিলিমিনারিতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা থাকে তিন থেকে চার লাখ। আর চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয় আড়াই থেকে তিন হাজারজন। সে ক্ষেত্রে প্রতি পদের বিপরীতে এক শরও বেশি প্রতিযোগী।
করোনার কারণে পিএসসি বিসিএস পরীক্ষা নিতে কিছুটা বিলম্ব করলেও গত দুই বছরে জট অনেকেটা কমেছে। কিন্তু বিসিএস পরীক্ষার জট কমলেই তো হবে না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কেও তো এগিয়ে আসতে হবে। তারাই নিয়োগদাতা।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলা হয়, দুই বিসিএসে আটকে আছে ৪ হাজার ৬৮৩ ক্যাডার নিয়োগ। এই দুই বিসিএস হচ্ছে ৪১ ও ৪৩তম। এর মধ্যে ৪১তম বিসিএসের কার্যক্রম ৫ বছর আগে এবং ৪৩তম বিসিএসের কার্যক্রম শুরু হয় প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে। দুই বিসিএসের কার্যক্রম কবে শেষ হবে এবং কবে প্রজ্ঞাপন হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (৭ মার্চ ২০২৪, প্রথম আলো অনলাইন)। ৪২তম বিশেষ বিসিএস ছিল জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য। তারা দ্রুতই নিয়োগ পেয়েছেন।