কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

এবার ব্যাংক খাতে সুশাসন আনুন

যুগান্তর ড. আর এম দেবনাথ প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৫

নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা যার যার কাজে ইতোমধ্যেই মনোনিবেশ করেছেন। নতুন মন্ত্রীরা এমন সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন দরকার। সেটা বুঝেই সম্ভবত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রধান মন্ত্রণালয়গুলোতে বিরাট পরিবর্তন এনেছেন। অর্থ, বাণিজ্য, কৃষি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে বড় বড় ব্যবসায়ী সংসদ-সদস্যদের বাদ দিয়ে বসিয়েছেন নতুন মুখ; যাদের কেউ কিছুটা পরিচিত, বাকিরা সেভাবে নয়। মন্ত্রিসভা গঠনে এই পরিবর্তনকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। তবে শুধু নির্বাচন প্রক্রিয়া নয়, দরকার এখন সুষ্ঠু পদক্ষেপের। সমস্যাগুলো মোটামুটি বহুল আলোচিত এবং সবার জানা, যার কয়েকটির স্বীকৃতি আছে সরকারি দলের নির্বাচনি ঘোষণাপত্রেও। সব সমস্যার কথা এই ছোট কলামে আলোচনা করা সম্ভব নয়। আমি শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের কথাই আজ আলোচনা করব।


অর্থ মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমন সময়ে কার্যভার নিয়েছেন, যখন এ মন্ত্রণালয়টি কার্যত অকেজো। ‘নয়-ছয়’ খ্যাত সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলা যায় তার কার্যকালে মন্ত্রণালয়ে প্রায় অনুপস্থিতই ছিলেন। তার জায়গায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ কে করেছেন তা আমরা জানি না। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, তার অনুপস্থিতির সুযোগে মন্ত্রণালয়টি কার্যত রাজনৈতিকভাবে অভিভাবকহীন ছিল। মন্ত্রণালয় হয়ে ওঠে আমলানির্ভর। বিগত ৫ বছরে এ মন্ত্রণালয় অনেক সমস্যাপীড়িত হয়েছে। প্রথমেই যে সমস্যাটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে তা হচ্ছে, অর্থ খাতটি বাজার অর্থনীতির বাইরে কাজ করতে শুরু করে। এর শুরু সুদের হার নির্ণয়ের মাধ্যমে। কথা নেই বার্তা নেই সাবেক মন্ত্রী হোটেলে বসে ঠিক করে দিলেন ব্যাংক ঋণের ওপর সুদের হার। ব্যবসার কথা বলে, বিনিয়োগের কথা বলে তিনি ঋণের ওপর সুদের হার ঠিক করলেন ৯ শতাংশ আর আমানতের ওপর ৬ শতাংশ, যা থেকে ‘নয়-ছয় সুদনীতি’ কথাটি চালু হয়। ব্যাংক বোর্ডের পরিচালক নিযুক্তির নিয়ম পরিবর্তন, ঋণখেলাপির সংজ্ঞায় ঘন ঘন পরিবর্তন, বড় বড় ঋণগ্রহীতার পক্ষে সুবিধাজনক নিয়মনীতি চালু করা, বেসরকারি খাতকে বিদেশি ঋণ নিতে উৎসাহ প্রদান, ডলারের মূল্য বেঁধে রাখা ইত্যাদি নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি ব্যাংক খাতকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রিত খাত করে ফেলেন। অথচ সরকারের ঘোষিত নীতি হলো ‘মার্কেট ইকোনমি’। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সরকার নিতে শুরু করে ঋণ। এসব সমস্যার আশু সমাধান দরকার।


আমরা এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের খবরদারিতে। রিজার্ভ বাড়ানো, ডলারের মূল্য বাজারভিত্তিক করা, বিদেশি ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধ করা, রাজস্ব বাড়ানো, সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো রক্ষা করা এখন আমাদের প্রধান কাজ। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। বিষয়টি জরুরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। কঠোর নির্দেশনা দেওয়ারই কথা। ১৮-১৯ লাখ টন খাদ্যশস্য সরকারি গুদামে থাকা সত্ত্বেও, ভরা আমন মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদনের পরও জানুয়ারির প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে চালের দাম বাড়ছে। বাড়ছে যখন সারা বিশ্বে খাদ্যশস্যের দাম কমছে। শাকসবজি, মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, ফলমূল কোনোটার দামেই স্বস্তির লক্ষণ নেই। অথচ শীতকালেই মানুষের একটু স্বস্তিতে এসব ভোগ করার কথা। না, তা হচ্ছে না। সামনে পবিত্র রমজান মাস। ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ এখনই নিতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতেই অর্থমন্ত্রী তার দায়িত্ব নিয়েছেন। মূল্যস্ফীতি শুধু অর্থমন্ত্রী তার এখতিয়ারভুক্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি দিয়ে রোধ করতে পারবেন না। এখানে বাণিজ্য নীতিমালা জড়িত, জড়িত রাজস্বনীতি, ট্যারিফ কমিশন। জড়িত বহুল আলোচিত ‘সিন্ডিকেট’। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি রোধে ব্যর্থ হলে সবাই দায়ী করবে অর্থমন্ত্রীকে। অতএব, অচিরেই তাকে সিন্ডিকেট দমনসহ আরও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও