৭ জানুয়ারি ২০২৪ : আশার নির্বাচন, প্রত্যাশার নির্বাচন
আবারও ট্রেনে আগুন, আবারও চার জনের মৃত্যু, আবারও নির্বাচন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত স্কুলে আগুন, নির্বাচনী ক্যাস্পে আগুন, বাসে-ট্রাকে আগুন। ৫ জানুয়ারি রাত থেকে শুরু হওয়া ভয়াবহ আগুন সন্ত্রাসের মধ্যেই আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোট উৎসবের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ যেন হঠাৎ করেই আতঙ্কের বাংলাদেশ হয়ে উঠল।
বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নেই। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পথ খোলা রাখায় বিপুলসংখ্যক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ সব মিলিয়ে ২৮টি রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী এবার ভোটে অংশ নিচ্ছেন।
একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের বর্জনের মধ্যেও এত বিপুল সংখ্যক প্রার্থী এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণের চেহারা দিয়েছিল। প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রচারণায় প্রায় একমাস মুখর ছিল বাংলাদেশ। তবে এই নির্বাচনের উল্লেখযোগ্য দিক আওয়ামী লীগের সাথে আওয়ামী লীগের প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং নিজেদের ভেতর চরম বিষোদগার।
দলের মনোনীত নৌকা প্রার্থী বনাম দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মীরা বিভিন্ন আসনে সংঘাতে জড়িয়েছেন, নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা করেছেন, প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে কদর্য ভাষা ব্যবহার করেছেন এবং খুনের ঘটনাও ঘটেছে।
বিএনপি আসবে না এটা যখন নিশ্চিত হওয়া গেছে ঠিক তখন থেকে এই নির্বাচন কেবল সরকারের কাছে একটি নির্বাচন মাত্র ছিল না। ছিল নির্বাচনের রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা। সরকার এবং শাসক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। নির্বাচনে ভালো ভোটার উপস্থিতি দৃশ্যমান করতে হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখাতে হবে, সংসদের বিরোধী দল ঠিক করতে হবে এবং ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু করতে হবে। এই ব্যবস্থাপনার কৌশলেই দলীয় স্বতন্ত্রদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে নির্বাচন করার।