বাংলাদেশের নারী মুক্তিযোদ্ধারা কি অস্পষ্ট ও অকীর্তিত?

বিডি নিউজ ২৪ শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:২৭

মুক্তিযোদ্ধা তো মুক্তিযোদ্ধাই। পুরুষ, নারী, শিশু, দেশি, বিদেশি যে-ই হোন না কেন, যিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কোনো না কোনোভাবে অবদান রেখেছেন বা অংশগ্রহণ করেছেন, তিনিই মুক্তিযোদ্ধা। এতদসত্ত্বেও মুক্তিযোদ্ধার আগে নারী বা মহিলা যোগ করার প্রয়োজন পড়ছে। কেননা, মুক্তিযুদ্ধের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা সম্ভব যেগুলো নারী, পুরুষ, দেশি-বিদেশি নির্বিশেষে সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে যারা বাংলাদেশি বাঙালির ন্যায্য যুদ্ধ মনে করেছেন, যারা বাঙালির আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের তাগিদে এ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র চেয়েছেন এবং সেই রাষ্ট্র অর্জন করার জন্য এ যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন, বা রাজনৈতিক, সামাজিক, কূটনৈতিক, ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অংশ নিয়েছেন, তাদের সকলেই মুক্তিযোদ্ধা। বড় দাগে এরকম সরলীকরণ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চরিত্রকে বুঝতে যথার্থভাবে সাহায্য করলেও মুক্তিযুদ্ধের বহুমাত্রিক ব্যাপ্তি ও ব্যঞ্জনাকে পর্যাপ্তভাবে চিহ্নিত করতে পারে না। উপরন্তু, মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সংগ্রামের ধরনে যে ভিন্নতা ছিল, তাদের চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে যে বৈচিত্র্য ও বহুমুখিতা ছিল, সেটিকেও শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়।


মুক্তিযুদ্ধে যারা অস্ত্র হাতে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন, তাদের লড়াই ছিল একরকম। তাদের মধ্যে আবার সামরিক বাহিনি ছিল, ছিল বেসামরিক বাহিনি। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল তার নিজস্ব সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তোলে। কেউ কেউ আবার নিজস্ব বাহিনি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অস্ত্র হাতে যারা যুদ্ধ করেছেন তাদের সকলের যুদ্ধ একরকম ছিল না। তাদের কারও কারও লক্ষ্যও ভিন্ন ছিল। যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ না করে নানাভাবে মুক্তিবাহিনিকে সাহায্য করেছেন, তাদের লড়াই ছিল অন্যরকম। যারা বিভিন্ন দেশে ঘুরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন আদায় করেছেন, তাদের সংগ্রাম ছিল ভিন্নরকম।


যারা বেতারে খবর পড়ে, কবিতা আবৃত্তি করে, গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও সমগ্র দেশবাসীকে উদ্দীপিত করেছিলেন, তাদের লড়াই ছিল অন্যরকম। শরণার্থী শিবিরের জন্য যারা অর্থ ও ত্রাণ সংগ্রহ করেছিলেন তাদেরকে এক ভিন্ন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে যারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের সংগ্রামও অন্যদের চেয়ে আলাদা ছিল।


যে সমস্ত নারী অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিলেন, সংখ্যায় অল্প হলেও, তাদের বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। যে সমস্ত নারী ধর্ষিতা হয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে যুদ্ধশিশুর জন্ম দিয়েছিলেন, তাদের সংগ্রাম ছিল ভয়াবহতম। কেননা, যুদ্ধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কষ্ট, নিঃসঙ্গতা এবং সামাজিক বহির্ভুক্তি শেষ হয়ে যায়নি। বছরের পর বছর তাদের এ কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে, এখনও হয়ত বা কেউ কেউ বা অনেকে নিরবে নিভৃতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।


মুক্তিযুদ্ধের বহুমাত্রিক বাস্তবতা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মুক্তিযোদ্ধাদের ভিন্ন ভিন্ন সংগ্রাম ও চাওয়া-পাওয়া বুঝতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের ‘জনযুদ্ধ’ চরিত্রটি বোঝা যাবে না। বলা হয় যে, মুক্তিযুদ্ধের ওপর মানসম্পন্ন ও প্রামাণিক গবেষণা যা হয়েছে সেটি অপর্যাপ্ত। উপরন্তু, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ, প্রায় ৫ লক্ষ নারীর ওপর কৃত বহুমাত্রিক নির্যাতন, গণকবর ও টর্চার সেলের সংখ্যা নিয়ে প্রামাণিক ডকুমেন্টেশন না থাকার কারণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও জেনোসাইড বৈশ্বিকভাবে কম আলোচিত, কম উন্মোচিত এবং বর্তমানে আমরা সকলে মিলে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশের জেনোসাইডের যে স্বীকৃতির জন্য কাজ করছি, তাতেও নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও