কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

১৪ ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায়

বণিক বার্তা মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৪

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তি সংগ্রাম বাঙালির অপরিসীম ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জ্বল। মুষ্টিমেয় কিছু লোক ব্যতীত সাড়ে সাত কোটি বাঙালির অধিকাংশই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি ছিল। কেউ যুদ্ধ করেছে, কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছে, কেউবা নির্যাতিত হয়েছে। বলতে গেলে বাংলার মানুষ কোনো না কোনোভাবে হানাদার পাকসেনাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সার্বিকভাবেই ছিল একটি জনযুদ্ধ। ত্রিশ লাখ মানুষকে পাকবাহিনী হত্যা করেছে, প্রায় দুই লাখ মা-ভগ্নি ইজ্জত খুইয়েছে, বহু বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। নিরপরাধ মানুষের ওপর এমন অত্যাচার পৃথিবীতে বিরল।


মূলত পাক সামরিক বাহিনীর বাঙালি নিধন শুরু হয়েছে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন বড় শহরে অপারেশন সার্চলাইটের আড়ালে গণহত্যার মাধ্যমে। ঢাকায় আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যস্থল ছিল পিলখানার ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হানাদার বাহিনী প্রতিবাদী ছাত্র ও শিক্ষকদের নির্বিচারে হত্যা করে।


বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড: মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়জুড়ে পাকবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস দেশের জ্ঞানী-গুণী, শিক্ষিত ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের তুলে নিয়ে হত্যা করে। তবে বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপকতা ছিল যুদ্ধ শেষ হওয়ার শেষের দিনগুলোয়। এটি ছিল এক পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পাকিস্তানি বাহিনী যখন বুঝতে পারে যে বাংলাদেশের মাটিতে তাদের যুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব নয়, তখন নবপ্রতিষ্ঠিতব্য বাংলাদেশকে শিক্ষা, সংস্কৃতি, চিকিৎসাবিজ্ঞান তথা বুদ্ধিবৃত্তিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে নিরপরাধ বুদ্ধিজীবীদের ধরে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করে। মূল হত্যাকাণ্ডটি ঘটে ১৪ ডিসেম্বর রাতে। এরই মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাদের নিয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী চারদিক থেকে ঢাকাকে ঘিরে ফেলেছে। যেকোনো সময় ঢাকার পতন হতে পারে। জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে পূর্ববাংলায় নিয়োজিত পাকবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা তখন ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আত্মসমর্পণ নিয়ে নেগোসিয়েশনে ব্যস্ত। এরই মধ্যে তারা গোপনে এ দেশীয় দোসর কুখ্যাত রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর মাধ্যমে ১৪ ডিসেম্বর দিনে ও রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বিশিষ্ট শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী প্রভৃতি জ্ঞানী-গুণী লোকদের ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর নির্দিষ্ট কয়টি বধ্যভূমিতে হত্যা করে। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর নিকটাত্মীয় ও স্বজনরা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নিখোঁজ বুদ্ধিজীবীদের মরদেহ শনাক্ত করেন। অনেকের হাত-পা ও চোখ বাঁধা, দেহে নির্যাতনের চিহ্ন। কাউকে গুলি করে, আবার কাউকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। অনেকের লাশ শনাক্ত করা যায়নি, আবার অনেকের লাশ পাওয়া যায়নি।


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মার্চে পরিচালিত অসহযোগ ও গণআন্দোলনে এবং পরবর্তী সময়ে নয় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতিকে উৎসাহ দেয়া ও উজ্জীবিত রাখার ক্ষেত্রে এ দেশের কবি-সাহিত্যিক, সংগীত ও চিত্রশিল্পী, চলচ্চিত্রকার, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক প্রমুখ বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তাদের নিধন ও হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে পাকবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা বিশ্বের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক কালো অধ্যায় সৃষ্টি করে। 


বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন: বলতে গেলে ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনার সঙ্গেই বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা করা। সে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষককে হত্যা করা হয়। যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের প্রশিক্ষিত আধা সামরিক বাহিনী আলবদর ও আলশামস একটি তালিকা প্রস্তুত করে, যেখানে প্রগতিশীল, স্বাধীনতাকামী এসব বুদ্ধিজীবীর নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায় এ কাজের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি। স্বাধীনতার পর বঙ্গভবন (সাবেক গভর্নর হাউজ) থেকে তার সহস্তে লিখিত একটি ডায়েরি পাওয়া যায়, যেখানে নিহত ও জীবিত অনেক বুদ্ধিজীবী ও কৃতী ব্যক্তির নাম ছিল। বুদ্ধিজীবীদের তুলে নিয়ে হত্যা করার জন্য আলবদরদের ব্যবহৃত গাড়ির ব্যবস্থাও জেনারেল রাও ফরমান আলি করেছিলেন বলে তার ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও