মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে যাবে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রার্থী মনোনয়ন ও যাচাই–বাছাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এই নির্বাচনে নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ ২৯টি দল অংশ নিলেও বিএনপিসহ ১৫টি দল অংশ নিচ্ছে না। একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি, অন্যদিকে বর্জনের আহ্বান। এই প্রেক্ষাপটে আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. হারুন-অর-রশিদ।
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা দেখছেন কি?
ড. হারুন–অর–রশিদ: না, কোনো শঙ্কা দেখছি না। জনগণের উল্লেখযোগ্য অংশ এই নির্বাচনে অংশ নেবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও বিএনপি ছাড়া সব বড় দল নির্বাচন করছে। আশা করি, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।
কিন্তু বিএনপি তো জনগণের প্রতি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে। ২৮ অক্টোবর থেকে রাজপথ উত্তপ্ত। একদিকে বিরোধী দলের হরতাল–অবরোধ; অন্যদিকে পুলিশের গণগ্রেপ্তার, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি। বিভিন্ন স্থানে তাঁদের ওপর গুপ্তহামলার ঘটনাও ঘটছে। এ অবস্থায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আশা করা যায় কি?
হারুন–অর–রশিদ: নির্বাচন নিয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনা সব দেশেই ঘটে। ভারতেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে শত শত লোক মারা যায়। তবে বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে আসছে না, সেহেতু নির্বাচনটা সুষ্ঠু ও অবাধ করা সরকারের চ্যালেঞ্জ। অতীতের মতো তারা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে আশা করি। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু না হয়, অনেকেই চেষ্টা করবে। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হবে না।
নির্বাচনে কার সঙ্গে কার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে? আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আবার জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের শরিকেরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন–সমঝোতা করতে চাইছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।
হারুন–অর–রশিদ: আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ নির্বাচন অতীতেও করেছে। এবার করলেও দোষের কিছু নেই। আপনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সমঝোতার কথা বলছেন। কিন্তু এর বাইরেও অনেক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে; যেমন তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম ইত্যাদি। আমি মনে করি, নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে
বিএনপির মহাসচিবসহ অনেক নেতাকে জেলে পাঠানো হয়েছে নাশকতার মামলায়। বলা হয়েছে তাঁরা হুকুমের আসামি। একই মামলার আসামি ছিলেন বিএনপির নেতা শাহজাহান ওমর। কিন্তু তিনি জামিন পাওয়ার পরদিনই নৌকা প্রতীক পেয়ে গেলেন। নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে অন্য নেতারাও কি মুক্তি পেতেন?
হারুন–অর–রশিদ: এটা আইনগত প্রশ্ন। আসলে বিএনপিকে এই পথে নিয়ে গিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নিজে নির্বাচন করতে পারবেন না বলে অন্যদেরও নির্বাচন করতে দেননি। বিএনপির মহাসচিব ও অন্য নেতারা তো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সিদ্ধান্ত আসে লন্ডন থেকে। বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করতে থাকে, তাহলে আরও অনেকে দল ছাড়বেন।