মধ্যবিত্তরাও টিসিবির ট্রাকের পেছনে
অনেক চেষ্টা করেও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পরিবার কার্ড করতে পারেননি রাজধানীর কাঁঠালবাগানের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম। তবে ট্রাক থেকে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে হলেও অন্তত ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারবেন– এমন ভরসা ছিল। কিন্তু সেই ভরসাও রয়ে গেছে তাঁর অধরা। পরপর দু’দিন দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও পাননি টোকেন। গতকাল সোমবার দুপুর ১টায় কারওয়ান বাজার-সংলগ্ন সোনারগাঁও রোডে ন্যাশনাল প্লাজার সামনে সমকালকে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাসার কাজ ফালাইয়া তাড়াতাড়ি আইলাম। তবু পাইলাম না টোকেন। রোববার এফডিসির সামনে যাইয়াও টোকেন পাই নাই। ঠেলাঠেলি করে টোকেন নেওন লাগে। আমরা তো এটা পারি না, বাবা।’
গতকাল ন্যাশনাল প্লাজার সামনে ট্রাকের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি করে সংস্থাটির ডিলার হাসিনা এন্টারপ্রাইজ। দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, আড়াই শতাধিক নারী-পুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে। একই সংখ্যক ক্রেতা ঘুরছেন লাইনের আশপাশে। বিক্রয়কর্মী মো. নাহিদ বলেন, টোকেন দেওয়া শেষ ১১টায়। টোকেনের বাইরে কাউকে পণ্য দেওয়া হবে না। বারবার বলার পরও মানুষ এসে ভিড় করছেন। গাড়িতে যে পণ্য আছে, তা ৩৬ জনকে দেওয়া যাবে।
এর চেয়েও করুণ চিত্র দেখা গেছে বিজয় সরণি মোড়-সংলগ্ন কলমিলতা বাজারের পাশে ও মৌচাকে দেশ টিভির ভবনের সামনে।
কলমিলতা বাজারের পাশের চিত্রটি ছিল এমন– তখন দুপুর সাড়ে ১২টা। ২০ থেকে ২৫ নারী টিসিবির পণ্য বিক্রেতা মো. সিফাতের পেছন পেছন ঘুরছেন। বারবার অনুনয়-বিনয় করছেন একটি টোকেনের জন্য। বিরক্ত হয়ে সিফাত বলছেন, টোকেন শেষ, টোকেন শেষ। এর পরও তিনি যেদিক সরে দাঁড়ান, নারীরা সেখানেই তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকেন।
গতকাল এ পয়েন্টে ট্রাকে পণ্য বিক্রি করে টিবিসির ডিলার আমির অ্যান্ড সন্স। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কর্মীরা জানান, কাগজে সিরিয়াল নম্বর লিখে ৩০০ জনকে টোকেন দেওয়া হয়। যে পরিমাণ পণ্য থাকে, তাতে ওই সংখ্যক গ্রাহককে দেওয়া যায়। কিন্তু ক্রেতা ভিড় করেন তার দ্বিগুণ।