ডিভাইস ছাড়া কি শিশুকে বড় করা সম্ভব?
আনায়া তাবাসসুমের বয়স দুই বছর। খাওয়ার সময় তো বটেই, কোথাও ঘুরতে গেলেও তার হাতে থাকে মোবাইল ফোন। এতে তাকে শান্ত রাখা সম্ভব হলেও দিনদিন আনায়ার ব্যবহারে বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা দেখছেন মা রোকেয়া ইসলাম। যেমন অচেনা লোক দেখলেই ভয়ে কুঁকড়ে যাওয়া বা অকারণে জেদ করা। বিষয়টা নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
যুগটা স্মার্টফোনের। ডিভাইস তাই সব মানুষের হাতে হাতে। প্রযুক্তির প্রতি এই নির্ভরশীলতার কারণে আমাদের সন্তানরাও অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে ডিভাইসে। ডিভাইস আসক্তির ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিশুর মানসিক বিকাশ। এছাড়া মোবাইল ফোন থেকে নির্গত রেডিয়েশন শিশুর মস্তিষ্কের যেমন ক্ষতি করছে, তেমনি গ্যাজেটের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের চোখ। এছাড়া স্ক্রিনের দিকে নিবিষ্ট হয়ে তাকিয়ে থাকার কারণে সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা গড়ে উঠছে না শিশুদের মধ্যে।
ডিভাইস একেবারেই না দিয়ে কি শিশুকে বড় করা সম্ভব?
১। প্রথমত শিশুকে ডিভাইস দেওয়া যাবে, তবে ইন্টারনেট সংযোগসহ ডিভাইস দেবেন না। ইন্টারনেট সংযোগসহ ডিভাইস শিশু হাতে পেলে ক্রমাগত স্ক্রল করতে থাকে।এতে কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা কমতে থাকে শিশুর। এছাড়া এতে শিশু এমন কিছু কনটেন্ট দেখে ফেলতে পারে যা একেবারেই তার বয়স উপযোগী নয়। শিশুর সামনে ইন্টারনেট বা ওয়াইফাই অন করার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা জরুরি। শিশু যেন দেখে দেখে ইন্টারনেট অন করা শিখে না ফেলে।
২। শিশুকে মোবাইলের পাসওয়ার্ড বা প্যাটার্ন লক জানাবেন না। কোনোভাবে শিশু জেনে গেলে সেটা পরিবর্তন করে ফেলুন।
৩। শিশুকে বাছাই করা কিছু ভিডিও দেখতে দিন। আমাদের সংস্কৃতির সাথে উপযোগী এসব ভিডিও নামিয়ে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা ট্যাবে রেখে দিন। এগুলোই শিশুকে দেখতে দিন। এক মাস পর পর নতুন ভিডিও ডাউনলোড করবেন।
৪। শিশু যখন ভিডিও দেখবে তখন তার সঙ্গে গল্প করার চেষ্টা করুন। একদৃষ্টে নিবিষ্টমনে যেন সে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে না থাকে। যেমন যদি সে বেবি সার্ক গান দেখে তবে তাকে বলুন দেখো তো কতগুলো সার্ক, বলতো ওদের গায়ের রঙ কী?
৫। শিশুর স্ক্রিন টাইম নির্দিষ্ট করে দিন। এরপর জেদ করলেও তাকে আর দেখতে দেবেন না ডিভাইস।