
সর্বজনীন পেনশন স্কিম: কার্যকর করব কীভাবে
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্দেশ্য যে মহৎ– তাতে আমার সন্দেহ নেই। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সময়ে সম্ভবত ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে মাহবুব আহমেদ অর্থ সচিব থাকাকালে এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগ কিছুটা কাজও শুরু করে। মাঝখানে ধীর লয়ে এগোলেও বর্তমান অর্থ সচিবের সময়ে তা গতি পায়। সে কারণে অর্থ বিভাগ, অর্থমন্ত্রী ও সরকারপ্রধানকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয় সংক্ষিপ্তাকারে হলেও গত বৃহস্পতিবার দেশে প্রথম সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার জন্য।
জানা গেল, দেশের চার শ্রেণির প্রায় ১০ কোটি মানুষকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা বিবেচনায় নিয়েই এ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। শুরুতে এই পেনশন ব্যবস্থায় রয়েছে চারটি আলাদা স্কিম। সেগুলো হচ্ছে– প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা। এর মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাস; বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি; রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে ও তাঁতি ইত্যাদি স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সমতা স্কিম নেওয়া হয়েছে। তবে কোনো চাঁদাদাতা যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন।
অন্য যে দুটি স্কিম পরে চালু করা হবে বলে জানা গেছে, তার মধ্যে একটি শ্রমিক শ্রেণির জন্য, অন্যটি শিক্ষার্থী। তবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের কথা বললে বলা যায়, ২০৩৫ বা ২০৪১ সাল থেকে সরকারি কর্মচারী এবং স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্যও সর্বজনীন পেনশন স্কিম উন্মুক্ত করা হবে। এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর বয়স ৬০ বছর হলেই আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন একজন চাঁদাদাতা। তবে চাঁদাদাতা মারা গেলে তাঁর নমিনি বা মনোনীত উত্তরাধিকারী পেনশন পাবেন। এ ক্ষেত্রে চাঁদাদাতার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত হতে যত বছর বাকি থাকবে, সে সময় পর্যন্ত নমিনি পেনশন উত্তোলন করতে পারবেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- সর্বজনীন পেনশন