দুঃখ ঘোচানোর ‘মুহুরী বাঁধ’ ভেঙেই দুর্ভোগ
ফেনীর উত্তরের জনপদ ফুলগাজী ও পরশুরামের বিস্তীর্ণ এলাকাকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে নির্মিত মুহুরী বাঁধটি প্রতি বছরই কয়েক জায়গায় ভেঙে হাজার হাজার মানুষের দুর্গতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
নদীর পানি ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি ঢল আসায় শুধু মাটি দিয়ে তৈরি বাঁধটি নির্মাণের এক যুগের মাথায় বিভিন্ন স্থানে ভেঙে লোকালয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অভিমত। তারা এখন সেখানে নতুন করে টেকসই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
কিন্তু এলাকার ভুক্তভোগী মানুষের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণের সময় সেখানে কোনো ব্লক দেওয়া হয়নি। তাছাড়া বাঁধের সংস্কার কাজে নদীর বালু ব্যবহার করা হয়; যা বৃষ্টিতে ভেসে যায়। এ ছাড়া ইঁদুরের গর্ত দিয়েও পানি ঢুকে বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে।
পাউবো জানিয়েছে, মাতামুহুরী নদী ভারত থেকে ফেনীতে প্রবেশ করেছে। তার পাশেই রয়েছে কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী। মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া নদীর উপর ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২২ কিলোমিটার মাটির বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০০৪ সালে কাজ শুরু হয়, ২০১১ সালে শেষ হয়। বাঁধ নির্মাণের পরের কয়েক বছর এলাকা বন্যামুক্ত ছিল।
কিন্তু ২০১৩ সালে আকস্মিক বাঁধের তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। পরে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন কবলিত অংশ মেরামত হয়। এরপর প্রতিবছর ভাঙে বাঁধের বিভিন্ন স্থান। গত পাঁচ বছরে ‘মুহুরী বাঁধ’ অন্তত ৮৬টি স্থানে ভেঙেছে; আর এগুলো সংস্কারে পাউবো সোয়া সাত কোটি টাকার মত খরচ করেছে।
এর মধ্যে ২০১৮ সালে ২২টি স্থান মেরামতে ২ কোটি ৪৪ লাখ, ২০১৯ সালে ১৫টি স্থান মেরামতে ১ কোটি ৭৯ লাখ, ২০২০ সালে ২২টি স্থান মেরামতে ১ কোটি ৫০ লাখ, ২০২১ সালে ২১টি স্থান মেরামতে ২ কোটি ১৩ লাখ এবং ২০২২ সালে ৬টি স্থান মেরামতে ৭১ লাখ ব্যয় হয়েছে।