সমঝোতা চায় যুক্তরাষ্ট্র, কঠোর অবস্থানে সরকার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। তাঁদের চাওয়া পূরণ না হলে ভিসা নীতি ঘোষণার পর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের আশঙ্কার কথাও বলছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। তবে তেমন পরিস্থিতি এড়াতে রাষ্ট্রদূতসহ কূটনীতিকেরা সব পক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় সরকার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত। এসব বৈঠকে তাঁরা জানতে-বুঝতে চেয়েছেন ভোটের আগে দুই পক্ষের মধ্যৈ সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিরোধীদের প্রধান যে দাবি, তা নিয়ে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, নির্বাচনের সময় সরকারপ্রধান হিসেবে কে থাকবেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপির মূল বিরোধ তা নিয়ে। আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেই ভোটে যেতে চায়। আর ঠিক উল্টোটি চায় বিএনপি—শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এখন পর্যন্ত দুই দলই অনড় নিজ নিজ অবস্থানে।
দুই কংগ্রেসম্যান—ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের এড কেস ও রিপাবলিকান রিচার্ড ম্যাককরমিক—সফরের প্রথম দিন গতকাল পরপর চারটি বৈঠকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার পথ খুঁজছেন। বিষয়টি তাঁরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় তুলেছেন।
প্রায় দুই ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন দুই কংগ্রেসম্যান। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার পথ আছে কি না জানতে চেয়েছেন কংগ্রেসম্যানরা। তিনি তাঁদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে টেড কেনেডির মতো একজন আছেন, যিনি ঐকমত্যের জন্য মধ্যস্থতা করেছেন। এখানে ঐকমত্যের কোনো দাবি নেই। এখানকার বিরোধী দলের কাছে নির্বাচন নয়, সরকারের পতন গুরুত্বপূর্ণ, যা আলোচনার বিষয় নয়। বিরোধী দল বলছে, সরকারের পতন হবে, তারপর তারা নির্বাচন করবে। এই অবস্থায় সরকারের সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।