বিধবাদের তালিকায় পুরুষ, টাকা নয়ছয়, কাজে লাগেনি প্রশিক্ষণ
বাড়ির আঙিনায় ‘গ্রিনহাউসে’ কীভাবে সবজি চাষ করা যায়, তার প্রশিক্ষণ দিতে সরকারের কাছ থেকে ৪৯ কোটি টাকা নিয়েছিল প্রগতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা। কথা ছিল, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাঁরা পাবেন ৩০ হাজার টাকা দামের একটি করে গ্রিনহাউস। তাতে সবজি চাষ করে নারীরা স্বাবলম্বী হবেন।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের সালেহা বেগম ছিলেন এই প্রকল্পের সুফলভোগীর তালিকায়। গ্রিনহাউসে সবজি চাষ কেমন হচ্ছে, তা দেখতে গত ৩১ মে যাই তাঁর বাড়িতে। দেখা গেল, বাড়ির আঙিনায় কোনো গ্রিনহাউস নেই। সালেহা বেগম বিধবা বা স্বামী নিগৃহীত নন, তাঁর স্বামী রমজান আলী কৃষিকাজের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন। তাঁদের পরিবার গ্রামে সচ্ছল বলেই পরিচিত।
সালেহা প্রথম আলোকে বলেন, বছরখানেক আগে তিনি গ্রিনহাউসের ওপরে সাত দিনের প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তাঁর স্বামীও একই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। দুজনে তিন হাজার টাকা করে পান। টাকা দেওয়া হবে জেনেই তাঁরা প্রশিক্ষণে গিয়েছিলেন। তবে গ্রিনহাউস পাননি।
গ্রিনহাউস না দেওয়ার এই ঘটনা সরকারি-বেসরকারি (জিও-এনজিও) যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণসংক্রান্ত প্রকল্পে অনিয়মের একটি উদাহরণ। করোনাকালে দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি ও স্বাবলম্বী করে তোলার নামে এমন ২১টি প্রকল্পে সমাজসেবা অধিদপ্তর ৫০৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে ১৩টি প্রকল্পের কাজ শেষ, ৮টির কাজ চলছে। তবে শেষের পথে।
তিন মাস ধরে পাঁচটি প্রকল্প নিয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান ও সুফলভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকল্পের অনেক ক্ষেত্রেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। প্রকল্পগুলোতে দেওয়া স্বল্পমেয়াদি ও নামকাওয়াস্তে প্রশিক্ষণ কাজে লাগেনি বলে স্বীকার করেছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাই। কোনো কোনো এনজিও বাছাইয়ে অভিজ্ঞতার শর্তও মানা হয়নি। কোনো কোনো প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগও (আইএমইডি)।