রাজধানীর অদূরবর্তী দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিল আড়িয়ল বিলের অবৈধ আবাসন প্রকল্প সম্পর্কে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যথার্থই উদ্বেগ প্রকাশ করিয়াছে বলিয়া আমরা মনে করি।
সোমবার সমকালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। উপরন্তু এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ভূমি মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের নিকট চিঠি প্রেরণের সুপারিশ করা হয়। পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদীর মধ্যবর্তী মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর, সিরাজদীখান এবং ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রায় এক শত ৩৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা লইয়া গঠিত এই প্রাকৃতিক জলাশয়টি বর্ষায় পানিতে টইটম্বুর থাকলেও শীতকালে উহা বিস্তীর্ণ শস্যক্ষেত্রে পরিণত হয়। ফলে বিলটিতে একদিকে প্রচুর ধান এবং নানা প্রকার সবজির চাষ হয়; অন্যদিকে উহাকে প্রাকৃতিক মৎস্যভান্ডারও বলা যায়। নিঃসন্দেহে উক্ত অবৈধ আবাসন প্রকল্পসমূহ চলিতে থাকিলে দেশ শুধু একটা বিশাল খাদ্যঝুড়িই হারাইবে না; সংশ্লিষ্ট এলাকার পাশাপাশি ঢাকার পরিবেশ-প্রতিবেশও বিপন্ন হইতে বিপন্নতর হইবে। আমরা বিস্মিত, যথায় কৃষিজমির অকৃষি ব্যবহার বন্ধে খোদ প্রধানমন্ত্রীর একাধিক নির্দেশনা আছে; তথায় পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি এলাকা স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টির সমক্ষে কী করিয়া পরিবেশ ছাড়পত্রবিহীন আবাসন প্রকল্প গড়িয়া ওঠে।
আমরা জানি, পদ্মা সেতুর কারণে তৎসংশ্লিষ্ট সকল এলাকায় দ্রুত নগরায়ণ পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ঐ সকল এলাকায় জমির মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাইয়াছে। আর সুযোগসন্ধানী আবাসন কোম্পানিসমূহ বহু পূর্বেই সম্ভাব্য পরিস্থিতি উপলব্ধি করিয়া আড়িয়ল বিলের সহজ-সরল জমির মালিকদের ফুসলাইয়া তুলনামূলক সস্তা দরে বিলের অনেক জমি স্বীয় দখলভুক্ত করিয়াছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- অবৈধ স্থাপনা
- আবাসন প্রকল্প
- আড়িয়াল বিল