আলোচিত হিরো আলম এবং এরশাদীয় তরিকা
হিরো আলম হিসেবে পরিচিত আশরাফুল আলম সংসদ সদস্য হতে চেয়েছেন। এ জন্য কাগজপত্রের বিধান অনুসারে সব শর্ত পূরণ করে উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচনে অংশও নিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। তবে উপনির্বাচনে। বগুড়ার পর ঢাকা-১৭ আসনে অংশ নিয়েই তিনি পৌঁছে গেছেন আলোচনার শীর্ষে। শুধু তাই নয়, তার ওপর হামলার ঘটনা কেন্দ্র করে জাতিসংঘের প্রতিনিধির টুইট থেকে শুরু করে ১৩ দেশের কূটনীতিকদের বিবৃতির প্রভাবে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ত্রাহি মধুসূদন দশা। পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কূটনৈতিক তরিকায়। আর যথারীতি অকূটনৈতিক শব্দবাক্য ব্যবহার করেছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। প্রশ্ন উঠতেই পারে, হিরো আলম কেন যেতে চান সংসদে এবং তাকে নিয়ে কেনইবা ‘মহা’ তোলপাড়? প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, হিরো আলম কেন সংসদ সদস্য হতে চান। তার মনের গহিনের বাসনা তো আর জানা সম্ভব নয়। তবে তাকে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কবিতা ‘অমলকান্তি’র সঙ্গে তুলনা করা যায়। অমলকান্তি রদ্দুর হতে চেয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবসম্মত হবে না। বরং তাকে মোহাম্মদ রফিকের কবিতার সঙ্গে তুলনা করা বোধকরি একশতে একশ হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের মেধাবী শিক্ষক কবি মোহাম্মদ রফিকের বেশ আলোচিত একটি কবিতার কয়েকটি পঙক্তি হচ্ছে—‘সব শালা কবি হবে, পিঁপড়ে গোঁ ধরেছে উড়বেই, দাঁতাল শুয়োর এসে রাজাসনে বসবেই।’ সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদকে উদ্দেশ্য করে লেখা দীর্ঘ এ কবিতা অতি গোপনে ছাপানো হয়েছিল। এটি হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। বলা হয়, এ কবিতায় বিরক্ত হয়েই জেনারেল এরশাদ আরও অনেক অপকর্মের সঙ্গে কবিতা লেখার গতিও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য তার অপকর্ম অন্তহীন। এমনকি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে খোয়াব দেখা মসজিদে পরদিনই জুমার নামাজ আদায় করেছেন জেনারেল এরশাদ।