সহিংস পথে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হবে আত্মঘাতী
ঢাকায় বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশ কেমন দেখলেন? আগামী দিনের রাজনীতির গতি কোন দিকে?
ড. বদিউল আলম মজুমদার: কিছুটা উত্তাপ-উত্তেজনা থাকলেও বিএনপির মহাসমাবেশ ও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। রাজনীতিবিদরা কিছুটা হলেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা এমনই আশা করি। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মসূচি পালন করবে এবং এসব কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে তারা কোনো রকম সংঘাত-সহিংসতায় জড়াবে না, কোনো রকম সহিংসতায় লিপ্ত হবে না—এটাই কাঙ্ক্ষিত। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হবে না, এমন রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে কোনো বাধা নেই। তবে শুক্রবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ ছিল পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। এতে সংঘাত ও সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়, যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। প্রত্যেক দল তাদের নিজের মতো করে কর্মসূচি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করবে, তাতে কোনো সমস্যা নেই। এক দল কর্মসূচি ঘোষণা করবে এবং অপর দল একই সময়ে একই জায়গা বা কাছাকাছি জায়গায় কর্মসূচি ঘোষণা করবে, এটি কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। এতে উত্তোজনে আরও বৃদ্ধি পায়। এর ফলে সহিংসতা হতে পারে। ‘সহিংসতা’—সহিসংতা সৃষ্টি করে এবং এক সময়ে সেটি বেসামাল পর্যায়ে পৌঁছে যায়। গতকাল এক কিলোমিটারের মধ্যে দুটি বড় রাজনৈতিক দলের বিরাট সমাবেশ হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এ সমাবেশে যোগ দিয়েছে। উভয় সমাবেশ মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তারপরও সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। মোটামুটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আয়োজনের জন্য উভয় দলের রাজনীতিবিদদের প্রশংসা করি। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা আশঙ্কার বিষয়টি উপেক্ষা করতে পারি না।
কালবেলা: গতকাল আরেকটি খবর গুরুত্বপূর্ণ ছিল আর সেটি হলো—যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ কংগ্রেসম্যান কর্তৃক জাতিসংঘে তাদের প্রতিনিধিকে লেখা চিঠি। একে আপনি কীভাবে দেখছেন?
ড. বদিউল আলম মজুমদার: যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ জন কংগ্রেসম্যান কর্তৃক জাতিসংঘে তাদের প্রতিনিধিকে লেখা চিঠিকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। এ চিঠির মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের কিছু কিছু সংস্থার ব্যাপারে তারা খুবই কঠোর শব্দ ও বাক্য ব্যবহার করেছেন। জাতিসংঘের অধীনে বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়েও তারা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। এটি আমাদের জন্য কোনোভাবেই সম্মানজনক নয়। যেখানে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠাই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য—সেখানে আমাদের দেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী এসে নির্বাচন আয়োজন করবে, সেটি আমাদের মর্যাদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। দেশে রাজনৈতিক সমাবেশ শান্তিপূর্ণ করব কী করব না, তার চেয়ে কোনো অংশে কম নির্ভর করে না আন্তর্জাতিক মহল কীভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। এক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। এটি আমাদের দেশের ভার্বমূতির সঙ্গে সম্পর্কিত।