আমাদেরটা সমাবেশ তাদেরটা সংঘাত
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের এক দফা দাবিতে ২৭ জুলাই রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। একই দিনে শান্তি সমাবেশ আহ্বান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই পরিপ্রেক্ষিতে উভয় দলের শীর্ষ দু’জন নেতার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কী হবে ২৭ জুলাই? সংঘাত এড়িয়ে সমাধানের কোনো পথ খোলা রয়েছে কিনা? সাক্ষাৎকার দুটি নিয়েছেন এহ্সান মাহমুদ ও ফারুক ওয়াসিফ।
সমকাল: আওয়ামী লীগের কাছে আগস্ট শোকের মাস। এ মাসে কারও সঙ্গে বিবাদে না যাওয়াই এক ধরনের নীতি। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। বিএনপি এরই মধ্যে ২৭ জুলাই মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। সেখান থেকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের ঘোষণা আসতে পারে। তাহলে এবারের আগস্টে কি আমরা সংঘাত দেখব?
মুহাম্মদ ফারুক খান: প্রথম কথা হলো, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনো সংঘাতে বিশ্বাস করে না। আমরা সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। গত সাড়ে ১৪ বছর আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। সংঘাত তখনই হয়েছে, যখন বিএনপি-জামায়াত বা তাদের সমমনারা সংঘাত করার চেষ্টা করেছে। আমাদের সংঘাত করার প্রয়োজন নেই। কারণ বাংলাদেশে আমরা জনগণের দল এবং উন্নয়নের দল। সংঘাত মানে উন্নয়ন ব্যাহত হবে, জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বরং বিএনপিকে আমরা জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে জানি। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে তারা সেটা দেখিয়েছে। বাংলাভাই, শায়খ আবদুর রহমান, ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা, ২১ আগস্টের বোমা হামলা। এমনকি কানাডার আদালতও তাদের জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসবাদী দল হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। এমনকি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আমেরিকা জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত বলে ‘ডেঞ্জারাস’ মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তার আমেরিকা যাওয়া বন্ধ। পৃথিবীর কোনো দেশে সে যেতে পারে না। কারণ ইন্টারপোল তাকে অ্যারেস্ট করবে। খালি ওমরাহ্ করতে সৌদি আরব গিয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতই সন্ত্রাসী দল। তারা যদি সংঘাতের পথে আসে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আমরা জনগণকে সজাগ রেখেছি। আমরাও প্রস্তুত রয়েছি, যাতে জনগণের জানমালের ক্ষতি না হয়।
সমকাল: আগে দেখা যেত আওয়ামী লীগ আগে পদক্ষেপ নেয়; এর পর প্রতিক্রিয়া করে বিএনপি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, যখনই বিএনপি কর্মসূচি দিচ্ছে, সেদিনই পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এতে কি সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে?
ফারুক খান: এ কথা সত্য নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কয়েক মাস আগে বলেছে– এখন থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত লাগাতার সভা-সমাবেশ চলবে।
সমকাল: কিন্তু একই দিনে একই সময়ে পাল্টা কর্মসূচি কেন?
ফারুক খান: আওয়ামী লীগ আর বিএনপির সমাবেশের পার্থক্যটা বুঝতে হবে। আমাদেরটা সমাবেশ। তাদেরটা সমাবেশ নয়, তাদেরটার নাম সংঘাত। আওয়ামী লীগ বা আমাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর সমাবেশে বলা হয়, আমরা শান্তি চাই, উন্নতি চাই। আমরা চাই, বাংলাদেশ আরও উন্নতি করুক। বিশ্বও আজ আমাদের উন্নয়নের স্বীকৃতি দিচ্ছে। তাদের কথা হলো– সংবিধান মানি না। কালকের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ না করলে পালাবার পথ পাবে না ইত্যাদি। সেই সমাবেশগুলোতে দুনিয়ার অসত্য, গুজব, উস্কানি রয়েছে। পুলিশকে উস্কানি দেওয়া হয়। অতীতে বিএনপি-জামায়াতকে সমাবেশের নামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করতে দেখেছি। তাদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস করার কারণ নেই। তার পরও সরকার তাদের… বিশেষ করে মেইন রোড বন্ধ করে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে, যাতে তারা দায়িত্বশীল আচরণ করে।