বিএনপি সহিংসতার রাজনীতি করেনি, করবেও না

সমকাল প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৩, ০১:০১

বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের এক দফা দাবিতে ২৭ জুলাই রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। একই দিনে শান্তি সমাবেশ আহ্বান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই পরিপ্রেক্ষিতে উভয় দলের শীর্ষ দু’জন নেতার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কী হবে ২৭ জুলাই? সংঘাত এড়িয়ে সমাধানের কোনো পথ খোলা রয়েছে কিনা? সাক্ষাৎকার দুটি নিয়েছেন এহ্সান মাহমুদ ও ফারুক ওয়াসিফ।


সমকাল: ২৭ জুলাইয়ের বিএনপি ঘোষিত মহাসমাবেশ ঘিরে রাজনীতির ময়দানে উত্তাপ দেখা যাচ্ছে। বিপরীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়ে সমাবেশ ডেকেছে। বিএনপি আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে, বলা যায় কিনা? এই পর্যায়ে তাড়াহুড়া করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো কিনা– বিশেষ করে, সামনে আগস্ট মাসব্যাপী যেহেতু আওয়ামী লীগের কর্মসূচি থাকবে?


আব্দুল মঈন খান: বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি গত প্রায় ১৫ বছর ধরে চলছে, সেখানে বিএনপির এই পর্যায়ের কর্মসূচিকে তাড়াহুড়া বলা যাবে না। ইতোমধ্যে অনেক বিলম্ব হয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটি সরকার সব গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে বিসর্জন দিয়েছে। গায়ের জোরে, পুলিশ ব্যবহার করে, বন্দুকের জোরে একটি জাতিকে পদানত করে রেখেছে। কোন জাতি? যে জাতি আজ থেকে ৫০ বছরেরও আগে একটি প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যে বাংলাদেশের জন্য এই দেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল, সেই বাংলাদেশ আজকে কোথায় দাঁড়িয়েছে! এই দেশের মানুষ একাত্তরে উপলব্ধি করেছিল– বাংলাদেশের জন্ম অপরিহার্য। পাকিস্তানের অবকাঠামোর মধ্যে নাগরিকের অধিকার বলতে কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। সেখানে গণতন্ত্র বলতে কিছু থাকবে না। সেই সময়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার বা কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকার অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করছিল। পূর্ব বাংলার সোনালি আঁশখ্যাত পাট থেকে আয় করা অর্থ চলে যেত পশ্চিম পাকিস্তানে। আমাদের বঞ্চিত করা হতো। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পর আমরা সেই চিত্র কেন এখনও দেখছি? স্বাধীনতার যে মূলকথা, গণতন্ত্র– সেটি আজকের বাংলাদেশে নেই। বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক দলটি নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করে আসছে, তারাই তো স্বাধীনতার চেতনা ও আদর্শ পরিপন্থি কাজ করে চলেছে। স্বাধীনতার আদর্শের বিপক্ষে এই অর্থে বলছি, যে কারণে স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিল, তারা তার বিপক্ষে কাজ করছে। তারা এই দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। তারা এই দেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে ধ্বংস করছে।


সমকাল: বিএনপি তার আন্দোলনকে বলছে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই। এটাকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?


আব্দুল মঈন খান: আমি এই কথাটি স্পষ্ট করে বলতে চাই– এই সরকার দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে; স্বাধীন চিন্তার ক্ষেত্রগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের মানুষের যে স্বাধীনচেতা মনোভাব, সেটিকেও তারা ধ্বংস করেছে। এই দেশের মানুষের টুঁটি চেপে ধরে গুটিকয় স্বার্থবাদী ও অর্থলিপ্সু মানুষের ইচ্ছা পূরণ করে চলেছে। সেই অবস্থান থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। এই অবস্থার পরিবর্তন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে– এই কারণে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করছি না। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন করছি। এই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব; এই দেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। এ জন্য আমরা আন্দোলন করছি।


সমকাল: গত বছরের মধ্য জুলাই থেকে প্রায় টানা কর্মসূচি নিয়ে বিএনপি মাঠে আছে। এই সময়ে যেটি লক্ষণীয়, বাংলাদেশের অতীতের রাজনৈতিক কর্মসূচি যেমন হরতাল-অবরোধ; এসব দেখা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকার মতো বড় রাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো শক্তিশালী বৃহৎ জোট বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে যেভাবে সক্রিয় হচ্ছে, এটা কি তার কোনো প্রভাব?


আব্দুল মঈন খান: বিএনপি কখনোই সহিংসতার রাজনীতি করেনি। সরকার ও ক্ষমতাসীনরা বিভিন্ন সময়ে অপবাদ দিয়েছে। বিএনপির আন্দোলন নিয়ে অতীতে যা আমরা শুনেছি, সেটাকে অপবাদই বলব। সত্যিটা যদি বের হয়ে আসে, তখন সবাই জানতে পারবে। গণতন্ত্র নিজেই যেহেতু একটি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া, তাই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার যে প্রক্রিয়া, সেটিকেও আমরা শান্তিপূর্ণ রাখতে চাই। বিএনপি কখনও লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। এই দেশে সহিংসতার রাজনীতি করেছে আওয়ামী লীগ। আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন, সাপ কীভাবে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারা হয়। আওয়ামী লীগ একইভাবে মানুষ পিটিয়ে মেরেছে। দেশবাসী তা দেখেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও