ডেঙ্গু : অসচেতনতায় ভয়াবহতা বৃদ্ধির আশঙ্কা

দৈনিক আমাদের সময় সৈয়দ ফারুক হোসেন প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০২৩, ১৭:০৬

ডেঙ্গুতে আক্রান্তের রেকর্ডও ছাড়িয়ে যাচ্ছে একের পর এক। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এডিস মশাবাহিত এ মরণঘাতী রোগ যেন এখন দেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে। চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২৩ হাজার রোগী। এ সময়ে ডেঙ্গু প্রাণ কেড়েছে ১২০ জনের।


রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীর ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। হাসপাতালগুলোয় বলতে গেলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ততই ভয়াবহ হচ্ছে। ডেঙ্গু এখন আর বর্ষা মৌসুমের আতঙ্ক নয়, এর ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে। এটি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর তৎপরতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে। রাজধানীর কোনো হাসপাতালেই বেড খালি নেই। সরকারি হাসপাতালে বারান্দায় অতিরিক্ত বেড দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চলছে। সেই জানুয়ারি থেকে ডেঙ্গু শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রতিদিনই বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীরা ভিড় করছেন। প্রথমবারের মতো দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপে আবির্ভূত হয় ২০১৯ সালে। সেবার রাজধানী ঢাকার ৯৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টি ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে ছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সর্বকালের ভয়াবহ রেকর্ড। আক্রান্ত হওয়ার ৪ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা যায়। লক্ষণ দেখা দেওয়ার ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে শরীর থেকে তা আবার চলেও যায়। আক্রান্ত হলে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। তবে সংক্রমণ মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে তা হয়ে পড়ে মৃত্যুর কারণ। সাধারণত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তীব্র জ্বর (শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে), প্রচণ্ড মাথাব্যথা হয়। অক্ষিকোটরে অর্থাৎ চোখের পেছনে ব্যথা হয়। মাংসপেশি ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হয়। বমি বমি ভাব হয়। বিভিন্ন গ্রন্থি ফুলে ওঠে। শরীরে ফুসকুড়ি হয়। ভীষণ অস্থিরতা লাগে। ত্বক ঠাণ্ডা ও ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা বোধ হয়। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। প্রচুর পানি বা তরল খাবার খেতে হবে। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ দিতে হবে। আইবুপ্রোফেন ও অ্যাসপিরিনের মতো নন-স্টেরয়ডাল ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্য সব লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডেঙ্গু রোগের জন্য দায়ী মশা দিনে-রাতে যে কোনো সময় কামড়াতে পারে। ডেঙ্গু এখন ধরন পরিবর্তন করে পরিষ্কার ও অপরিষ্কার পানিসহ যে কোনো স্থানে বংশবৃদ্ধি করছে। তাই ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকতে চাইলে এমন পোশাক পরতে হবেÑ যা শরীরের বেশিরভাগ অংশই ঢেকে রাখে। দিনের বেলাও ঘুমানোর সময় মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। জানালায় নেট বা তারজালি ব্যবহার করতে হবে। হাত-পায়ে মশা প্রতিরোধী ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা, ঘরে কয়েল বা মশা প্রতিরোধী উদ্বায়ী পদার্থ ব্যবহার করা, আবাসস্থলের আশপাশে আবদ্ধ পানি অপসারণ করতে হবে। ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগÑ যা সাধারণত স্ত্রী মশা থেকে মানবদেহে বাহিত হয়। চার ধরনের ভাইরাস এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। প্রধানত বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরের মতো গ্রীষ্ণমণ্ডলীয় দেশ বা অঞ্চলগুলোয় ভাইরাসজনিত এই রোগের প্রকোপ বেশি। যে অঞ্চলের জলবায়ুতে গ্রীষ্মকালের প্রভাব বেশি, সে অঞ্চলকে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল বলে। এই দেশ বা অঞ্চলগুলোর শহর ও উপশহরগুলোতেই ডেঙ্গু বেশি সংক্রমিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বর্তমানে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ থেকে ৪০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ এই রোগে আক্রান্তের ঝুঁকিতে আছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ বছর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও রেকর্ড ভাঙতে শুরু করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা জ্বর হলেই ডেঙ্গু ভাইরাসের পরীক্ষা দিচ্ছেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পজিটিভ পাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও