ঘোষিত মুদ্রানীতি হুন্ডি ব্যবসাকে দমাতে পারবে না

বণিক বার্তা ড. মইনুল ইসলাম প্রকাশিত: ০৭ জুলাই ২০২৩, ১২:৩৮

বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৮ জুন নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বছরে মাত্র একবার মুদ্রানীতি ঘোষণার যে নীতি গ্রহণ করেছিলেন সেটা আমার মতে সঠিক ছিল না। কারণ বর্তমান বিশ্বে মুদ্রানীতির গুরুত্ব যেভাবে বাড়ছে তার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিতে নানা পরিবর্তনকে সঠিকভাবে অনুধাবন করে সময়োপযোগী যথাযথ মুদ্রানীতি পরিবর্তন করার জন্য বছরে অন্তত দুবার মুদ্রানীতি ঘোষণা আধুনিক অর্থনীতিগুলোর জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বহু বছর আগে থেকেই (অনেক দেশে প্রত্যেক তিন মাসে একবার মুদ্রানীতি ঘোষিত হয়)। পুরনো নীতিতে ফিরে যাওয়ায় বর্তমান গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এবারের ঘোষিত মুদ্রানীতির প্রধান দুটো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো, ব্যাংকঋণের সুদহারের ‘৯ শতাংশ ক্যাপ’ অপসারণ করে তা ১০ দশমিক ১২ শতাংশে নির্ধারণের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে ক্লায়েন্ট বিবেচনায় সুদহার নির্ধারণের ক্ষমতা প্রদান এবং ডলারের দাম বাজার কর্তৃক নির্ধারণের ব্যবস্থা চালু করা। বাংলাদেশ গভর্নরের আশা, এর ফলে বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে বিদ্যমান ডলারের চার ধরনের দাম ক্রমে দূরীভূত হয়ে কিছুদিনের মধ্যে টাকার অংকে ডলারের একক মান নির্ধারিত হবে। এখানেই আমি গভর্নরের সঙ্গে পুরোপুরি একমত হতে পারছি না।


হুন্ডি ব্যবস্থায় দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচার কয়েক বছর ধরে যে ডলার সংকট এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারাকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে নতুন ঘোষিত মুদ্রানীতিতে এ বিপজ্জনক হুন্ডি ব্যবসাকে দমনের কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমি বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারকে সাবধান করে চলেছি যে আমদানি বাণিজ্যের ওভার-ইনভয়েসিং, রফতানি বাণিজ্যের আন্ডার-ইনভয়েসিং এবং রফতানি আয় দেশে ফেরত না এনে বিদেশে রেখে দেয়ার মতো প্রধান প্রধান পুঁজি পাচার পদ্ধতিকে টেক্কা দিয়ে বর্তমানে হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার ক্রমেই পুঁজি পাচারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। এটাই এখন আমাদের অর্থনীতির বর্তমান টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টির জন্য প্রধানত দায়ী। দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গেড়ে বসা খেলাপি ঋণ সমস্যার প্রধান কারণও এই হুন্ডি পদ্ধতিতে ক্রমবর্ধমান ব্যাংকঋণ পাচার। কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রায় অর্ধেক রেমিট্যান্স এখন হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশে আসছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের সিংহভাগ রেমিট্যান্স প্রেরকরা হুন্ডি পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। অতএব ২১ বিলিয়ন ডলার যদি ফরমাল চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স আসে তাহলে কমপক্ষে আরো ২১-২২ বিলিয়ন ডলার বা তার চেয়েও বেশি রেমিট্যান্স (টাকার আকারে) হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশের অর্থনীতিতে ঢুকছে। তখন থেকেই আমি বলে চলেছি, হুন্ডি ব্যবস্থাকে কঠোরভাবে দমন না করলে ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহকে বাড়ানো যাবে না। কারণ হুন্ডি ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচার বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের ‘এক নম্বর সমস্যায়’ পরিণত হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও