
রাসায়নিক সার সংকট বিপদ নাকি সুযোগ?
বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থায় ভাঙন আসন্ন এবং আমাদের খাদ্যনিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন। এ বিপত্তির গোড়ায় হলো রাসায়নিক সারের ওপর অতিনির্ভরতা ও অর্গানিক জৈব সারের প্রতি আমাদের অনাগ্রহ। রাসায়নিক সার ছিল গত শতাব্দীর ষাটের দশকে সংঘটিত তৃতীয় কৃষি বিপ্লবের (যা সবুজ বিপ্লব নামেও পরিচিত) অন্যতম বড় অনুঘটক। কিন্তু আজকে খাদ্যনিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের জন্যও এক বড় আপদে পরিণত হয়েছে রাসায়নিক সার। কারণ অ্যামোনিয়া সার ও ইউরিয়ার মতো নাইট্রোজেনভিত্তিক সারগুলোর অপরিহার্য উপকরণ হলো অনবায়নযোগ্য জীবাশ্ম জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস। অন্যান্য রাসায়নিক সারও নানা অনবায়নযোগ্য খনিজ উপাদান দিয়ে তৈরি। অদূরভবিষ্যতে এগুলোর দুষ্প্রাপ্যতা দেখা যাবে। কাজেই টেকসই কৃষির জন্য ও দীর্ঘমেয়াদে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অর্গানিক জৈব সার ও কীটনাশকের ব্যবহার বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিকল্প কৃষিপন্থার ওপর গুরুত্বারোপ বাড়াতে হবে।
রাসায়নিক সারের ওপর অতিনির্ভরতার অন্যতম প্রধান কারণ মুনাফাতাড়িত বৈশ্বিক অর্থ ব্যবস্থায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দৌরাত্ম্য। বিশ্বজুড়ে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকসহ অন্যান্য অনিরাপদ ও নাজুক কৃত্রিম কৃষিপন্থা অবলম্বনের জন্য সার কোম্পানিগুলোর যোগসাজশে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর ক্রমাগত প্রণোদনা দেয়ার কারণে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থার সর্বস্তরে আজ পরিবেশদূষণকারী বর্জ্য নির্গমন অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- সংকট
- খাদ্য নিরাপত্তা
- রাসায়নিক সার