তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটল কেন
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, তাইওয়ান সরকার যদি দেশটির স্বাধীনতা ঘোষণা করে, যুক্তরাষ্ট্র তাতে সায় দেবে না। ব্রিটিশ দৈনিক দি ইনডিপেনডেন্টসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠককালে ব্লিংকেন এ কথা বলেন। শনিবার তিন দিনের সফরে ব্লিংকেন বেইজিং যান।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন চীন সরকার, যারা ১৯৪৯ সাল থেকে সেখানে ক্ষমতাসীন– বরাবর তাইওয়ানকে তাদের দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে ‘এক চীন’ নীতিতে বিশ্বাসী বলে দাবি করলেও এত স্পষ্ট করে এর আগে কখনোই তাইওয়ানের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেনি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটি। বরং চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে ১০০ মাইল দূরের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপটি স্বাধীন দেশের মতো তৎপরতা চালাতে পারছে কার্যত মার্কিন সর্বাত্মক সহায়তার বদৌলতে। বর্তমানে তাইওয়ানের সমরাস্ত্র আমদানির প্রধান উৎস যুক্তরাষ্ট্র। সম্ভবত এসব কারণেই ব্লিংকেনের ওই বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, তাইওয়ানের উত্তর-পূর্বে জাপান এবং দক্ষিণে ফিলিপাইন অবস্থিত। দুটি দেশই যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। মার্কিন সেনা ঘাঁটি আছে দুই দেশেই। তা ছাড়া দ্বীপরাষ্ট্রটির আশপাশে আরও কয়েকটি দ্বীপ আছে, যেগুলোতে মার্কিন প্রভাব একচেটিয়া। ফলে কৌশলগত দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাইওয়ানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। আরেকটি বিষয় হলো, অন্তত সপ্তদশ শতক থেকে তাইওয়ান চীনের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৮৯৫ সালে এক যুদ্ধে পরাজিত হয়ে চীন দ্বীপটি জাপানের দখলে দিতে বাধ্য হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান পরাজিত হওয়ায় চীন দ্বীপটি ফিরে পায়। কারণ মাও সে তুং-এর নেতৃত্বাধীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও চিয়াং কাইশেকের নেতৃত্বাধীন কুওমিনটাং ঐক্যবদ্ধভাবে ওই দখলদারিত্বের অবসান ঘটায়। কিন্তু দুই দলের মধ্যকার গৃহযুদ্ধের কারণে ১৯৪৯ সালে দ্বীপটি আবার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। কুওমিনটাং মার্কিন তথা পশ্চিমা সমর্থন নিয়ে তাইওয়ানকে মূল চীন হিসেবে দাবি করে সেখানে শাসন চালায়।