‘আজম খান অমরত্ব লাভ করেছে তার কালজয়ী গানের মধ্য দিয়ে’
১৯৭৩ সালের কথা। তখন ইশতিয়াক, ল্যারি, ইদুসহ বেশ কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে একটি গানের দল করেছিলাম। আমরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তখন শুধু ইংরেজি গান করতাম। তারপরও বাংলা গান গাওয়ার একটা তাগিদ ছিল। সেটা জেনেই আমাদের আরেক বন্ধু শিল্পী ফিরোজ সাঁই এক দিন এসে আমাকে জানায়, তার পরিচিত একটি ছেলে আছে, নাম আজম খান। ভালো গায়। তাকে নিয়ে বাংলা গান করা যেতে পারে। কিন্তু দলের অন্যরা বাংলা গান গাওয়ার পক্ষে ছিল না। তার পরও আমি ফিরোজ সাঁইকে বলি, আজম খানের সঙ্গে দেখা করার কথা। এরপর ফিরোজ সাঁইয়ের মাধ্যমে পরিচয় হয় আজম খানের সঙ্গে। পরিচয়ের প্রথম দিনেই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়ে যায়। তার গায়কীও আমাকে মুগ্ধ করে। তাই গান রেকর্ড করারও পরিকল্পনা শুরু করি।
বন্ধু শামীম ও রুমির সঙ্গে আড়াইশ টাকা দিয়ে ইন্দিরা রোডের ঢাকা রেকর্ডিং স্টুডিওতে শিফট ভাড়া করি। এরপর আজম খান ও আমি দু'জনে মিলে রেকর্ড করি চারটি গান। আজম খানের তুমুল জনপ্রিয় দুই গান 'ওরে সালেকা ওরে মালেকা' ও 'হাইকোর্টের মাজারে' সেদিন রেকর্ড করা হয়েছিল। আমি রেকর্ড করেছিলাম 'চাঁদ জাগে তারা জাগে' ও 'দুনিয়াটা কত মজার' গান দুটি। এই গানগুলো শোনার পর স্টুডিওর মালিকের এতটাই ভালো লেগেছিল যে, তিনি আমাদের গান রেকর্ড আকারে প্রকাশ করারও দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। সেই গানগুলো সুপারভিশন করে দিলেন আজম খানের বড় ভাই খ্যাতিমান সংগীত পরিচালক আলম খান। স্টুডিওর মালিক তাঁর কথা রাখতেও খুব একটা দেরি করেননি। প্রথম আজম খানের দুটি গান রেকর্ড আকারে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশের পরপরই গান দুটি দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে। জনপ্রিয়তার সেই রেশ ধরেই একসময় আমরা গড়ে তুলি বাংলা পপ গানের ব্যান্ড 'উচ্চারণ'।
- ট্যাগ:
- বিনোদন
- মৃত্যুবার্ষিকী
- আজম খান