গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের জাদু কোন সমীকরণে
গাজীপুর সিটির যে নির্বাচন আওয়ামী লীগের পোড় খাওয়া নেতা আজমত উল্লা খানকে দ্বিতীয়বারের মত নৌকার ভরাডুবি দেখাল, একষট্টি বছর বয়সে হঠাৎ ভোটের রাজনীতিতে নামা জায়েদা খাতুনকে পৌঁছে দিল মেয়রের আসনে, ভোটে না থেকেও সে নির্বাচনে আসলে জয় হল জায়েদার ছেলে, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের।
আজমত উল্লার ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে পরাজয় আর জাহাঙ্গীরের ‘ম্যাজিক’ নিয়ে ভোটের পরদিন রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
সেসব আলোচনায় আসছে নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতি, আওয়ামী লীগের ভোট ভাগ হয়ে যাওয়া, একজন মায়ের জন্য ভোটারদের সহানুভূতি, আজমতের দুর্বলতা আর কৌশলী জাহাঙ্গীরের কারিশমার কথা।
সেই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের আট মাস আগে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তাও দেখতে পাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
নির্বাচন বিশ্লেষক আব্দুল আলীম বলেন, “মেয়র পদে নৌকার আজমত উল্লা খান হেরেছেন টেবিল ঘড়ির জায়েদা খাতুনের কাছে; মানে জাহাঙ্গীর আলম ভোটে না থেকেও মায়ের পেছনে থেকে যেভাবে কাজ করেছেন, তাতে আমি বলব জিতেছেন জাহাঙ্গীর আলম।”
তার মতে, ভোটের মাঠে নৌকা আর টেবিল ঘড়ির যে লড়াই হয়েছে, তা আসলে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই। আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক ভাগ হয়ে গেছে দুই প্রার্থীর কাছে। সেই লড়াইয়ে মাকে জিতিয়ে এনেছেন ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকা জাহাঙ্গীর।
“জাহাঙ্গীর নিজের প্রতি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে, এটা গুরুত্বপূর্ণ। বলা যায় জায়েদা খাতুনের নয়, এটা জাহাঙ্গীরের বিজয় হয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বার্তা দেবে- বুঝে শুনে মাঠের বাস্তবতা দেখেই প্রার্থী দিতে হবে।”
আওয়ামী লীগ অবশ্য হারের বিচার বিশ্লেষণের চেয়ে ‘ভালো নির্বাচন’ উপহার দেওয়াকেই বড় হিসেবে দেখাতে চাইছে। স্থানীয় নির্বাচনের এ ফল জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না বলেও দাবি করছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা।