রাজনীতির বিরোধ যখন পরিবারে পৌঁছে যায়
পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত বিজেপি সংসদ সদস্য সৌমিত্র খাঁ এবং তাঁর স্ত্রী ও বর্তমানে তৃণমূল নেত্রী সুজাতা মণ্ডলের ‘রাজনৈতিক বিরোধ’ কীভাবে পরিবারে ভাঙন ধরিয়েছে, সেই কেচ্ছা সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকাতেও মাঝেমধ্যে এসে থাকে। এখানকার বিভিন্ন সুপরিচিত পরিবারেও অতটা না হলেও সাধারণ পরিবারগুলোতে রাজনৈতিক বিরোধ কম নেই। এমনকি দাম্পত্য কলহেরও কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর রাজনীতির কারণে পারিবারিক ও সামাজিক বিরোধ তো প্রায় পুরোনো বিষয়।
প্রায় দুই যুগ আগে এক পরিবারের দাম্পত্য কলহ মেটাতে গিয়ে প্রথমবারের মতো জানতে পেরেছিলাম, ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য এবং দলীয় সমর্থনের পছন্দ-অপছন্দ থেকেও বিরোধ তৈরি হতে পারে। যে দম্পতির দাম্পত্য কলহ মেটাতে গিয়েছিলাম, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন। আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছিলাম, তখন প্রেমই বড় ছিল। বিয়ের পর ধীরে ধীরে বিভিন্ন অমিলের বিষয় সামনে আসতে থাকে এবং সেই অমিল থেকে এক সময় পরস্পরের রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক বিশ্বাসের ভিন্নতার বিষয়ই বড় হয়ে ওঠে। এমনকি সন্তানের চেয়েও রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য বড় হয়ে যায়।
ঘটনাটি মনে রয়ে গিয়েছিল। এর পর গত দুই যুগে আমি যখনই কোনো দাম্পত্য কলহ বা বিয়ে বিচ্ছেদের কথা শুনেছি; কৌতূহলী মন জানতে উৎসাহিত করেছে– স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রাজনীতি নিয়ে বিরোধ ছিল কিনা। একাধিক বিচ্ছেদের ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীর ভিন্ন রাজনীতি ও রাজনৈতিক বিশ্বাসের বিষয়টি অন্যতম কারণ হিসেবে জানতে পেরেছি। কিছুদিন আগে একজন তাঁর বিয়ে বিচ্ছেদের কথা বলতে গিয়ে বললেন, তাঁর সাবেক স্বামী ও সন্তানের বাবা অত্যন্ত ভালোমানুষ। কিন্তু শুধু তাঁর ও তাঁর পরিবারের রাজনৈতিক বিশ্বাস ভিন্ন হওয়ায় তিনি আর সংসার করতে পারলেন না। কারণ, তিনি স্ত্রী ও মা হলেও তাঁর নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তাঁকে স্বামীর সঙ্গে সংসার চালিয়ে নিতে দেয়নি। কারণ, তাঁর স্বামীও নিজের রাজনৈতিক বিশ্বাস থেকে বের হতে রাজি ছিলেন না।