রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যেতে তদবিরের হিড়িক
প্রতিবছরই কয়েক শ লোককে রাষ্ট্রীয় খরচে হজে পাঠায় সরকার। হজ ব্যবস্থাপনা বিধিমালায় অসচ্ছল মুসলমানদের এই সুযোগ দেওয়ার বিধান থাকলেও অসচ্ছল লোকজন এই সুযোগ কমই পান। গত বছরও বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৫৪ জনকে পাঠানো হয়েছিল। তবে তাদের বিমানভাড়া দিতে হয়েছিল। এ বছরও রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যেতে জোর তদবির শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৫ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, আবেদনকারীদের মধ্যে আছেন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব ও তাঁদের গানম্যান, পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এমনকি রাষ্ট্রীয় খরচে হজে পছন্দের লোক পাঠাতে চান ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সদস্যরাও। সংশ্লিষ্ট মহলের তদবিরের চাপে অস্থির মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় খরচে হজের সুযোগ বন্ধ করা বা সীমিত রাখার চিন্তাও আছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা যায়, হজ ব্যবস্থাপনার সার্বিক তদারকির জন্য উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিসহ পাঁচ ক্যাটাগরির দল গঠন করার প্রস্তাব তৈরি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। প্রশাসনিক দল, সহায়ক দল, স্বাস্থ্যসেবা ও কারিগরি দলে ধর্ম মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অন্তত ৪০০ জন এসব দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন। সরকারের শীর্ষ মহলের সম্মতি সাপেক্ষে ঈদের পর অফিস আদেশ জারি করবে মন্ত্রণালয়।
রাষ্ট্রীয় খরচে হজে পাঠানোর সুযোগ বন্ধ করা হবে কি না, জানতে চাইলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় খরচের হজে এবার ব্যয়সংকোচনের নির্দেশনা রয়েছে। যেখানে ১০০-২০০ লোক যাওয়ার কথা, সেখানে ৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও চাপ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী।’ রাষ্ট্রীয় খরচে হজযাত্রী প্রেরণ প্রসঙ্গে বিদ্যমান হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২-এর ২৪ (১) ধারায় বলা আছে, ‘সরকার প্রয়োজনীয়সংখ্যক অসচ্ছল ব্যক্তিকে হজ করিবার উদ্দেশ্যে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করিতে পারিবে। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার এই সহযোগিতার পরিমাণ নির্ধারণ করিতে পারিবে।’
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- হজযাত্রা
- তদবির
- সরকারি খরচ