কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রোগীদের ব্যয় বছরে ৫৩,২৭৪ কোটি টাকা

www.ajkerpatrika.com প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৩, ০৮:৪৬

দেশে স্বাস্থ্যসেবা পেতে সাধারণ মানুষকে প্রায় ৬৭ শতাংশ অর্থ ব্যয় করতে হয় নিজের পকেট থেকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ পরিসংখ্যানেই এমন তথ্য উঠে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, ২০২০ সালে দেশের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা পেতে ৫৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করতে হয়েছে নিজের পকেট থেকে। এর বড় অংশ ব্যয় হয়েছে ওষুধ ও স্বাস্থ্য-সরঞ্জাম কেনার পেছনে।


২০২০ সালে দেশে স্বাস্থ্য খাতে মোট ব্যয় ছিল (সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে) প্রায় ৭৭ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৩৬ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে ওষুধ ও স্বাস্থ্য-সরঞ্জাম কিনতে। মোট স্বাস্থ্য-ব্যয়ের মধ্যে আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার (ওপিপি) অর্থাৎ রোগীদের পকেট থেকে ব্যয় ছিল ৫৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু ওষুধ কেনায় মানুষকে ব্যয় করতে হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ওপিপির ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশই ব্যয় হয়েছে ওষুধের পেছনে। এটি মোট ব্যয়ের ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।


এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আউট অব পকেট ব্যয় অবশ্যই বেশি। আমরা এটা কমানোর চেষ্টা করছি। তবে হাসপাতালের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, লন্ড্রি বিল; রোগীদের পথ্য ইত্যাদির হিসাব কখনো স্বাস্থ্যসেবায় ধরা হয় না। সেটা অন্তর্ভুক্ত হলে আউট অব পকেট ব্যয় আরও কমে আসবে।’


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষকে ওষুধ কেনায় সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। বিশেষ করে, অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা দেশে বাড়ছে। এর মধ্যে হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ, ক্যানসার, স্থূলতা ইত্যাদি রোগের চিকিৎসাব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি। এর ব্যয়ভার ওপিপির পরিমাণ বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য কারণ। এ ছাড়া এসব রোগনির্ণয় এবং ফলোআপের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার পেছনে রোগীরা খরচ করে থাকেন প্রায় ৬ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রামের তুলনায় শহরে ওপিপি ব্যয় বেশি। উচ্চ আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা কেনার প্রবণতা বেশি। প্রিভেনটিভ স্বাস্থ্যসেবায় ২০২০ সালে সরকারের খরচ প্রায় ২ হাজার ৭২২ টাকা। একই সময়ে বেসরকারি খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ১১০ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছরে রুটিন খরচের সঙ্গে অতিরিক্ত প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় হয় কোভিড ভ্যাকসিন ক্রয় এবং ব্যবস্থাপনা খাতে।


সরকারি হাসপাতালে ব্যয় বাড়ছে
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সরকারি চিকিৎসাসংক্রান্ত ব্যয় (অন্তর্বিভাগ, বহির্বিভাগ ও রোগনির্ণয়) দিন দিন বাড়ছে। ২০২০ সালে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই খাতে ব্যয় হয় প্রায় ৮ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। একই সময়ে বেসরকারি খাতে ব্যয় হয় প্রায় ১৩ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা।


২০২১-২২ অর্থবছরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন ১৪টি ওপি, ইআরপিপি এবং সিআরইএর (কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমার্জেন্সি অ্যাসিসট্যান্ট প্রজেক্ট) আওতায় উন্নয়ন খাতে প্রায় ৭ হাজার ৮৯৪ টাকা ব্যয় করা হয়।


এই হিসাবের বাইরেও আছে ইডিসিএলের (এসেনসিয়াল ড্রাগস) সরবরাহ করা এক হাজার কোটি টাকার ওষুধ। সরকারি কল্যাণ বোর্ড, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুরারোগ্য ব্যাধি আক্রান্ত রোগীদের সহযোগিতা, স্থানীয় সরকারের আরবান হেলথ কার্যক্রম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রদত্ত মাতৃত্বকালীন ভাতা। এমনকি উপরিউক্ত হিসাবে যুক্ত হয়নি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সেবা।


রেফারেল পদ্ধতি নিশ্চিত করার পরামর্শ
স্বাস্থ্য খাতে রোগীদের পকেট থেকে ব্যয় প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই খাতে ব্যয় কমাতে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। উদ্যোগ না নিলে এই ব্যয় আরও বাড়বে। সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের জন্য ব্যয় বাড়াতে হবে। ওষুধের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আনতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় লোকবল-সংকট কাটাতে প্রয়োজনে পিপিপির (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় আনা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রেফারেল পদ্ধতি নিশ্চিত করা। উপজেলা পর্যায়ে ২৫ হাজার শয্যা রয়েছে, সেগুলোর সঠিক ব্যবহার করতে পারলে টারশিয়ারি পর্যায়ে ও প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। এসব পদ্ধতি অবলম্বন করলে রোগীদের আউট অব পকেট কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও