নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনা

সমকাল সাজ্জাদুল হাসান প্রকাশিত: ০৭ মার্চ ২০২৩, ০১:৩১

৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় উদযাপিত হবে। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য– ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নারীর যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।


নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁদের সার্বিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা পরিলক্ষিত হয়। ১৯৭২ সালেই সরকারি চাকরিক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু নারী উন্নয়নে ১০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে যেসব নারী পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু তাঁদের ‘বীরাঙ্গনা’ খেতাবে ভূষিত করেছেন। জাতির পিতার নির্দেশনায় ১৯৭২ সালে সরকার বীরাঙ্গনাদের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করে। নারী পুনবার্সন বোর্ড গঠন করে তাঁদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। জাতির পিতার সহধর্মিণী, স্বাধীন বাংলার ইতিহাস রচনায় চিরস্মরণীয় মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব অপরিমেয় দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ ও সাহস নিয়ে নিরলসভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে প্রেরণা দিয়েছেন। নারীর ক্ষমতায়ন ও সম্মানের পারিবারিক শিক্ষার যে বীজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বপন করেছেন, তা জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মে প্রতিনিয়ত প্রতীয়মান।


অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক অবস্থা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, শিক্ষা, কর্ম, চিকিৎসা, নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতি বা এসব ক্ষেত্রে তাঁদের শক্ত অবস্থান তৈরির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য অবদান আমরা দেখতে পাই। এত অর্জন সীমিত পরিসরে তুলে ধরা সম্ভব নয়। তারপরও কিছু তুলে ধরার প্রয়াস।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণয়ন করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার পদে একজন নারীকে নির্বাচিত করেন। শেখ হাসিনাই তাঁর মন্ত্রিসভায় প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে নারীকে দায়িত্ব দেন। সংসদ উপনেতাও হন একজন নারী। সুশীল সমাজের কেউ কেউ বলতে চান– দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও বিরোধীদলীয় নেতা নারী হলেই কি নারীর ক্ষমতায়ন হয়ে যাবে? তা বলা যাবে না। তবে এ কথাও সত্য, এত গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীর পদায়নের ফলে তাঁদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। এর ফলে নারীর ক্ষমতায়ন দীর্ঘস্থায়ী ও সুদূরপ্রসারী হবে। উপজেলা পরিষদে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি ও ইউনিয়ন পরিষদে তিনজন নারী সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার বিধান নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের নারী এখন শুধু বিচারক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার নন; নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এবং রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন দক্ষতার সঙ্গে। শিক্ষা, চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কূটনৈতিক দক্ষতা, খেলাধুলা, পর্বতারোহণ, নাসায় কাজ করাসহ সব চ্যালেঞ্জিং পেশায় তাঁরা সাফল্যের চিহ্ন রাখছেন। বাংলাদেশে এখন অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সচিব বা সমমর্যাদার পদে নারী কর্মকর্তা আছেন, যা ইতোপূর্বে ছিল না। শেখ হাসিনার সরকারই প্রথম উচ্চ আদালতের বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সেনাবাহিনীতে মেজর জেনারেল পদে নারীকে পদায়িত করেছে।


আমার যতদূর মনে পড়ে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অফিসের ফাইল উপস্থাপনের এক পর্যায়ে কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম, এই মুর্হূতে ৬৯টি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নারীরা কাজ করছেন। তখন তিনি ফাইল দেখতে দেখতে বলেছিলেন– ‘কয়জন পুরুষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছে, তা তো বললে না?’


বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সর্বশেষ প্রতিবেদনের ১৬তম সংস্করণের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ’ প্রতিবেদনে বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭১ । লিঙ্গ সমতায় ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশ থেকে এগিয়ে আছে। রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ গতবারের ১৪৭তম অবস্থান থেকে ছয় ধাপ এগিয়ে ১৪১তম অবস্থানে উঠে এসেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৩তম। স্বাস্থ্য সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে; ২০২১ সালের ১৩৪ থেকে উঠে এসে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯তম স্থানে।


সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের বিনা বেতনে শিক্ষার ব্যবস্থাও করেন শেখ হাসিনা। যে কারণে দেশে নারীশিক্ষার হার অনেক বেড়েছে। শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত নারীদের শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বাল্যবিয়ে ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কঠোর আইন করেছে শেখ হাসিনা সরকার। সন্তান জন্মের পর আগে অভিভাবকের জায়গায় শুধু পিতার নাম লেখা হতো; এখন মায়ের নামও লেখা হয়। জননেত্রীর এই বিশেষ উদ্যোগের কারণে সমাজে মায়ের অধিকার এবং আত্মসম্মান কাগজ-কলমেও স্বীকৃতি পেয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও