ইসলামে অঙ্গদান: কিডনিটা কোথায় যাবে?

বিডি নিউজ ২৪ হাসান মাহমুদ প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:২৯

১৮ জানুয়ারি ২০২৩, শৈশবের অনারোগ্য ব্যাধিতে ১৯ বছর বয়সে সারাহ ইসলাম দুনিয়া ছেড়ে গেলেন, অমর হয়ে রইলেন ‘দেশের প্রথম মরণোত্তর অঙ্গদানকারী’ হিসেবে কিডনি ও চোখ দান করে। তার কিডনি নিয়ে দুজন মানুষ মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে গেছেন ও তার দুই কর্নিয়া নিয়ে দুজন ফিরে পেয়েছেন তাদের দৃষ্টি। কত বড় মহান কাজ হল কল্পনা করা যায়? আশা করি তার এই মহৎ উদাহরণে উৎসাহিত হয়ে অনেকেই মরণোত্তর কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গ দান করবেন। কারণ দেশে অগণিত মানুষ তাদের সুস্থ অঙ্গ নিয়ে মারা যান অথচ তাদের কিডনি/অঙ্গ পেলে অসংখ্য রোগী সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকতে পারতেন।


অঙ্গদান বিষয়টি সাম্প্রতিক, কোরআন-হাদিসে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট বা সরাসরি কিছু নেই। বিশ্ব-আলেমদের মধ্যে অঙ্গদানের আলোচনাটি শুরু হয়েছিল ৫০-এর দশকে৷ বিষয়টির সাথে জড়িয়ে আছে রাষ্ট্রীয় আইন, গণমানস ও এর পক্ষে-বিপক্ষে ইসলামী ধর্মবিশ্বাস। ব্যাপারটার ইসলামী আঙ্গিক আমরা সংক্ষেপে তিন ভাগে দেখব ১) অঙ্গদানের প্রতি বিরোধিতা, ২) অঙ্গদানের প্রতি সমর্থন ও (৩) অঙ্গদানের ইসলামী জটিলতা।


১) অঙ্গদানের বিরোধিতা


রক্তদানের বিরোধী বয়ানে আছে অমুসলিমদের থেকে রক্ত নেওয়া ঠিক নয়, কারণ খোদাভীরু মুসলমানের রক্তে কাফের, পাপিষ্ঠ ব্যক্তিদের রক্তের প্রভাব পড়ার সম্ভবনা থাকে ইত্যাদি। অঙ্গদানের বিরোধীরা বলেন জীবিত হোক মৃত হোক, শরীরের ক্ষতি, আত্মহত্যা বা অঙ্গদানের অধিকার মানুষের নেই। কারণ শরীর আল্লাহর তরফ থেকে আমানত মাত্র, এর মালিক মানুষ নয় বরং আল্লাহ। হাদিসে মৃতদেহকে অত্যন্ত সম্মান দেওয়া হয়েছে, এ-ও বলা হয়েছে `মৃতের ও জীবিতের হাড় ভাঙা একই কথা’। কাজেই মৃতদেহ থেকেও অঙ্গদান করা যাবে না। তবে ‘গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সীমিত ক্ষেত্রে এটা করা যেতে পারে… নইলে মানবদেহ এক সময় ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হবে, তখন জীবন্ত মানুষকে হত্যা করে এই নিকৃষ্ট ব্যবসা চালানো হবে’ –আত-তাহরিক, ফেব্রুয়ারি, ২০১০।


২) সমর্থন


সৌদি আরব, মিসর, আমিরাতসহ পুরো মুসলিম বিশ্বে অঙ্গদান এখন কোনো ব্যাপারই নয়, অহরহই হচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বেও অনেক মুসলিমই অঙ্গদান করেন। অর্থাৎ ইসলামের মানবতাবাদী ব্যাখ্যাই গ্রহণ করছে মুসলিম বিশ্ব, পিছু হটছে ইসলামের মানবতাবিরোধী ব্যাখ্যা। কোরআন বলেছে, “যে অন্য কারও জীবন রক্ষা করল সে যেন সবার জীবন রক্ষা করল” –সূরা মায়েদা, ৩২। অঙ্গদানে মানুষের জীবন রক্ষার মত মহাকল্যাণ হয়, যার চেয়ে মহৎ কর্ম আর কিছু নেই। অনেক ইসলামী বিশেষজ্ঞের মতেই, মৃত ব্যক্তির যে কোনো অঙ্গ দান করা যাবে, জীবিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে নিরুপায় হলে তিনটি শর্তে অঙ্গদান করা যাবে ক) অঙ্গদাতার যেন শারীরিক ক্ষতি না হয়, খ) অঙ্গ গ্রহণে যাতে গ্রহীতার উপকার হয়, হুজুগ বা শখ করে নেওয়া যাবে না এবং গ) এর মধ্যে কোনো আর্থিক লেনদেন থাকবে না। আল্লাহ আমাদেরকে অনেক কিছুই দিয়েছেন এবং সেগুলো ব্যবহার বা অপব্যবহার করার স্বাধীনতাও দিয়েছেন। পরকালের বিচার সেজন্যই আছে, এই স্বাধীনতাটা না থাকলে পরকালের বিচার অর্থহীন হয়ে পড়ে।


৩) এর জটিলতা


এটা অত্যন্ত ইন্টারেস্টিং। সহি বুখারিতে আছে, “ইবনে আব্বাস বলিয়াছেন, রসূল (স.) বলিয়াছেন তোমরা খালি পায়ে হাঁটিয়া আল্লাহর সম্মুখীন হইবে নগ্ন এবং খৎনা-বিহীন ভাবে” –অষ্টম খণ্ড, হাদিস ৫৩১। এটা আছে সহি বুখারি প্রথম খণ্ড ১১৫, দ্বিতীয় খণ্ড ২২৬, চতুর্থ খণ্ড ৫৬৮ ও ৬৫৬, ষষ্ঠ খণ্ড ১৪৯ ও ২৬৪, সপ্তম খণ্ড ৭৩৫ ও অষ্টম খণ্ড ২৩৭, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩ এবং ৫৩৪ এগুলোতেও। অর্থাৎ ‘খালি পায়ে হাঁটা’ ও ‘খৎনাহীন নগ্ন শরীর’ অনুযায়ী কেয়ামতে মানুষ শরীর নিয়ে উঠবে। আমরা তো জানি পরকালের শাস্তি ও পুরস্কার সবই দেহ-নির্ভর যেমন দোজখের আগুন ও বেহেশতের খাদ্য-পানীয় তহুরা শরাব।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও