ব্যক্তির প্রচেষ্টায় যদি সরকারের নীতি সহায়তা যুক্ত হয়, তাহলে অনেক সময় অসামান্য এমন কিছু ঘটে, যা একমাত্র স্বপ্নেই সম্ভব। নাটোরের সদর উপজেলার খোলাবাড়িয়া গ্রামে ১৮ বছর আগে শুরু করা কবিরাজ আফাজ উদ্দিনের উদ্যোগ এখন অন্তত ১৩টি গ্রামের কয়েক শ মানুষের ভাগ্যের বদল ঘটাচ্ছে। এসব গ্রাম থেকে উৎপাদিত ঔষধি পণ্য দেশের বাজারের পাশাপাশি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।
আফাজ উদ্দিনের ঔষধি গাছের চাষাবাদ নিয়ে ২০০৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় ‘নাটোরের ঔষধি গ্রাম’ শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়। খোলাবাড়িয়া গ্রামে তিনিই প্রথম ঔষধি গাছের চাষ শুরু করেছিলেন। সেসব গাছগাছড়া শহরের ফুটপাতে বা গ্রামের হাটবাজারে বিক্রি হতো। আফাজ উদ্দিনের স্বপ্ন ছিল, সেখানকার উৎপাদিত ভেষজ একদিন উড়োজাহাজে করে বিদেশে যাবে।
১৬ জানুয়ারি ২০২২ প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে দেখা যাচ্ছে, নাটোরের খোলাবাড়িয়া ও আশপাশের গ্রামগুলো থেকে উৎপাদিত পণ্য বর্তমানে তাইওয়ান, জাপান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আরব আমিরাতসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া শতাধিক প্রতিষ্ঠান এখানকার গাছগাছড়া থেকে ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরি করে রপ্তানি করছে।
২০০৪ সালে নাটোরের ঔষধি গ্রাম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ভেষজ চাষিদের মধ্যে সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে। ধীরে ধীরে পুরো এলাকার চিত্রটাই বদলে যেতে শুরু করে। আগে যেখানে বাড়ির আঙিনা ও আবাদি জমির আলে ঔষধি গাছের চারা আবাদ করতেন, এখন সেখানে বাণিজ্যিকভাবে জমিতে ঘৃতকাঞ্চন, শিমুলমূল, মিছরিদানা, রোজেলা, আলকুশি, অশ্বগন্ধা ও শতমূলের চাষ হচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় প্রতিবছর বাড়ছে ঔষধি গাছের আওতাধীন জমি।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ঔষধি গাছ
- বাণিজ্যিক চাষ