বিশ্ব মন্দার কবলে পড়লে বাংলাদেশ কী করবে?
গোটা বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশ ২০২৩ সালে মন্দার কবলে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মন্থর হওয়ার আশঙ্কায় ২০২৩ সাল এক কঠিন সময় পার করবে এবং সারা বিশ্বে এর প্রভাব পড়বে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, উচ্চ সুদহার ও মূল্যস্ফীতি এবং চীনে করোনার বিস্তার বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করায় এমনটা হতে যাচ্ছে বলেই অধিকাংশের ধারণা।
গত বছরের অক্টোবরে আইএমএফ তাদের আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ২০২৩ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খানিকটা কম হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল।
নতুন বছরে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য অশনিবার্তাকে আমাদের অনেকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে মনে করছেন। তাঁদের মতে, বিশ্বমন্দার ঢেউয়ের প্রথম আঘাত আসবে রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে। এতে অর্থনীতিতে চাপ আরও বাড়বে। তাই মন্দার অভিঘাত মোকাবিলায় ব্যয়ে লাগাম টানতে হবে, নিতে হবে আগাম প্রস্তুতি।
কোভিডের ক্ষত কাটিয়ে বিশ্বের দেশগুলো যখন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ফিরে আসতে শুরু করে, সে সময় থেকেই বিশ্বব্যাপী জ্বালানি, জাহাজভাড়া ও কাঁচামালের দাম বাড়তে থাকে। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ মূল্যবৃদ্ধির এ সূচকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে বিশ্বব্যাপী সরবরাহশৃঙ্খল ব্যাহত হচ্ছে, জ্বালানির রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি এবং সে কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে।
বিশ্বমন্দা হলে বেশি প্রভাব পড়বে আমাদের পণ্য রপ্তানিতে। ইউরোপ যেহেতু সম্মিলিতভাবে আমাদের সবচেয়ে বড় বাজার, সেখানে মন্দা যদি গভীর ও দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে আমাদের রপ্তানিতে আঘাত কড়া হবে। করোনা বাড়ার কারণে চীনের অর্থনীতি যদি হোঁচট খায়, তাদের সরবরাহশৃঙ্খল বিঘ্নিত হয়, তাহলে শুধু রপ্তানি নয়, আমদানিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা জানি, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের একটি বড় অংশ আসে চীন থেকে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বিশ্ব অর্থনীতি
- অর্থনৈতিক মন্দা