কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আমন ধানের দাম ১ টাকা বৃদ্ধিতে কৃষক হতাশ

দেশ রূপান্তর নিতাই চন্দ্র রায় প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৪৭

সার, ডিজেল ও কৃষি শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কথা মোটেও বিবেচনা না করে সরকার এবার আমন ধানের দাম গত বছরের চেয়ে প্রতি কেজিতে মাত্র ১ টাকা বৃদ্ধি করে ২৮ টাকা নির্ধারণ করেছে। সে হিসাবে প্রতিমণ (৪০ কেজি) ধানের  দাম হলো ১ হাজার ১২০ টাকা। অথচ দেশের বিভিন্ন বাজারে বর্তমানে প্রতিমণ আমন ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, যা সরকারি দামের চেয়ে ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা বেশি। এটা অন্নদাতা কৃষকের সঙ্গে প্রহসন ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয় বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশে কৃষক ছাড়া সবারই সংগঠন আছে। আন্দোলন করে তারা তাদের দাবি আদায় করে নেন। ব্যবসায়ীরা জনগণের কষ্টের কথা তোয়াক্কা না করে নানা অসিলায় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। কারণ, তাদের সংগঠন আছে। আছে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের অসীম ক্ষমতা ও অর্থের দাপট। বাস মালিকরা তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া বৃদ্ধি করেন। কারণ, স্বার্থের সেতুবন্ধনে তারাও দলমত নির্বশেষে সবাই সংগঠিত। কিন্তু সরকার কিংবা কোনো পক্ষই কৃষকের স্বার্থ দেখছে না।


এটা ভুলে যাওয়া ঠিক না যে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় আমন ধানের গুরুত্ব অপরিসীম। উৎপাদিত ধানের শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ আসে আমন থেকে। আমনের উৎপাদন খরচও কম। তেমন সেচের প্রয়োজন হয় না। খরার সময় একটি সম্পূরক সেচ দিলেই পাওয়া যায় কাক্সিক্ষত ফলন। কিছু নামলা জাত ছাড়া প্রায় অধিকাংশ আমন ধানই ইতিমধ্যে কাটা গেছে। এখন মাড়াই, সেদ্ধ ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। কোনো কোনো কৃষক আমন ধান কেটে সেই জমিতে আলু, আখ, সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, মসুরসহ নানা ধরনের রবিশস্য চাষ করছেন। কেউ করছেন শীতকালীন সবজির চাষ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং বিশেষ করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল নতুন জাত ও হাইব্রিড ধানের জাত সম্প্রসারণের কারণেও এ-বছর আমনের ফলন বেড়েছে বেশ।


বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পূর্বাভাস বলছে, অনুকূল আবহাওয়া-তাপমাত্রা ও সূর্যালোকের কারণে আশাতীত ফলন হয়েছে আমনের। এতে ১ কোটি ৬৩ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে। গত পাঁচ বছরের আমন মৌসুমে  ফলনের ওপর আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট উপাদান সূর্যালোক, সূর্যকিরণ ঘণ্টা, তাপমাত্রা, মেঘমুক্ত আকাশ ও আপেক্ষিক আর্দ্রতার প্রভাবের গাণিতিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ব্রি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, এ-বছর আমনের ফলন হবে হেক্টর-প্রতি ৩ দশমিক ৭৫ টনের বেশি। অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, এটাই গত পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ ফলন। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে আমনের ফলন হয়েছিল হেক্টর-প্রতি ২ দশমিক ৬১ টন এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে হয়েছিল ২ দশমিক ৫৭ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট আবাদকৃত জমির ৭৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। কর্তনকৃত ৪৪ লাখ হেক্টর জমিতে ১ কোটি ৩৮ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। সে হিসাবে হেক্টর-প্রতি ধান ফলেছে ৩ দশমিক ১ টন। অন্যদিকে, কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে ৫৬ লাখ ২০  হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ এ-বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৭ হাজার ৪৪৭ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে। আর রোপণকৃত জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার টন। বোনা আমনে ২ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে। এক্ষেত্রে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে কম আবাদ হয়েছে। সে হিসাবে এবার আমন মৌসুমে রোপা ও বোনা মিলে মোট আবাদ হেেয়ছে ৫৯ লাখ ২২ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৪৫ হাজার টন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও