মেধাস্বত্বের লালন ও সংরক্ষণে ইউজিসির করণীয়
একুশ শতকে জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে বিশ্বদরবারে টিকে থাকা এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান বিশ্বে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে উচ্চশিক্ষা বিশেষত উচ্চতর গবেষণা অনস্বীকার্য। আমরা যদি বিশ্ব অর্থনীতির দিকে তাকাই তাহলে দেখব, যে দেশে উচ্চশিক্ষার হার, দক্ষ জনশক্তি ও উদ্ভাবনী শক্তি বেশি সে দেশ ও জাতি সর্বক্ষেত্রে তত বেশি এগিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সূতিকাগার। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় নতুন জ্ঞান সৃজন, ধারণ এবং তা অংশীজনদের মাঝে বিতরণ। বৈশ্বিক চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণায় অধিকতর গুরুত্বারোপ, গবেষণালব্ধ ফলাফল বাণিজ্যিকীকরণ ও বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারে তা সংযোজন করা আজ সময়ের বাস্তবতা।
বিশ্বায়নের এ যুগে মেধার কোনো বিকল্প নেই। মেধাস্বত্ব আধুনিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। উদ্ভাবনসংশ্লিষ্ট বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রমকে যথাযথভাবে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। মানবজাতির অগ্রগতি ও সার্বিক কল্যাণ নির্ভর করে প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক জগতে নতুন কিছু সৃষ্টির ক্ষমতার ওপর। এ জাতীয় নতুন সৃষ্টিকর্মগুলোর আইনি সুরক্ষা প্রয়োজন। মেধাসম্পদের প্রসার ও সংরক্ষণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে, নতুন কর্মক্ষেত্রের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি এবং জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করে। বিশ্বের অনেক দেশ একমাত্র মেধাসম্পদকে পুঁজি করে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা সুদৃঢ় করেছে। উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে শিক্ষকদের জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় শিক্ষকতার পাশাপাশি নতুন জ্ঞান সৃজনে মৌলিক ও উদ্ভাবনীমূলক গবেষণা কর্মকাণ্ডে বেশি মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের গবেষণা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নতুন আবিষ্কার/উদ্ভাবন দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গবেষণালব্ধ ফলাফল পেটেন্ট হলে একদিকে যেমন গবেষকের সুনাম ও মর্যাদা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে রাষ্ট্র ও গবেষক উভয়ই আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।