সুলভ চাল আটাও দুর্লভ
সবে শোনা গেল ফজরের আজান। রাজধানীর কাঁঠালবাগান ঢালের কাছে সিআর দত্ত রোড। পাশের পেপার গলির বস্তি থেকে ভোরের আলো-আঁধারিতে হন্তদন্ত হয়ে হামদর্দের প্রধান কার্যালয়ের সামনে একাকী ছুটে এলেন ষাট পেরোনো এক নারী। তিনি সজেরুন বেগম। হাতের মুঠোয় নীলরঙা জোড়া পলিথিন। সরকারের খোলাবাজারের (ওএমএস) চাল-আটা কেনার যুদ্ধে নামতেই তাঁর এই কাকডাকা ভোরের অভিযান। এত ভোরে এসেও সজেরুনের হাপিত্যেশ। এসেই দেখেন, তাঁর আগে লাইনে দাঁড়িয়ে গেছেন জনা দশেক নারী। পুরুষের সারিটা আরেকটু লম্বা। ওএমএসের পণ্যবাহী ট্রাক আসার কথা সকাল ৯টার পর। ঘণ্টাখানেক দাঁড়ানোর পর সজেরুন ক্লান্ত শরীর নিয়ে বসে পড়েন ফুটপাতে। সময় যত গড়াচ্ছে, ক্রেতার সারিও হচ্ছে লম্বা।
সকাল সাড়ে ৯টার কিছু সময় পর আসে প্রতীক্ষার ট্রাক। বসা থেকে উঠে সারিতে ঢুকে যাঁর যাঁর অবস্থানে দাঁড়ালেন সবাই। জায়গা দখলের হট্টগোল আর ঠেলাঠেলির মধ্যে উঠে দাঁড়ালেন সজেরুনও। ভোর থেকে চাল-আটা হাতে পাওয়া পর্যন্ত এই প্রতিবেদক অনুসরণ করেন সজেরুনকে। ঘড়ির কাঁটায় যখন সকাল ১১টা, তখন ডাক পড়ে সজেরুনের। তিনি চাইলেন পাঁচ কেজি চাল আর তিন কেজি আটা। বিক্রেতা জানিয়ে দিলেন, আটা নেই। শেষমেশ পাঁচ কেজি চালেই তিনি খুঁজলেন স্বস্তি। এর পর কোমরে চালের ব্যাগ নিয়ে হাঁটেন বাসার পথে।