![](https://media.priyo.com/img/500x/https%3A%2F%2Fimages.prothomalo.com%2Fprothomalo-bangla%252F2022-11%252Fc9f3164e-a91b-4aa2-ab31-4cd91574e3fb%252FMasukArt_27_November_2022.gif%3Fauto%3Dformat%252Ccompress%26format%3Dwebp%26w%3D640%26dpr%3D1.0)
আমাদের জন্য ঘন হতে থাকে সর্বনাশ
গ্রামের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নানাবাড়ির সূত্রে, সেখানেই আঁতুড়ঘরে আমার জন্ম। শৈশব, কৈশোরে সব ছুটিতে সেখানে বেড়াতে যাওয়া ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দের বিষয়।
গ্রামের জগৎ, মানুষ, আম-কাঁঠাল-লিচুসহ ফলের গাছ, পুকুর, খাল–বিল, ধান চাষ, পাট চাষ, আখ চাষ, মাছ ধরা, গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি, ধান কাটা, পিঠা, সাঁতার, খেলাধুলা, হাটবাজার, যাত্রাসহ নানা কর্মতৎপরতা, মানুষের আনন্দ–বেদনা, হাসি–ঠাট্টা, সালিসসহ বহু কিছুর সঙ্গে পরিচয় এখানেই। গ্রামের সঙ্গে এই যোগাযোগটুকুও যদি না থাকত, তাহলে আমি আরও অসম্পূর্ণ থাকতাম।
গ্রামে আমার এক প্রিয় গন্তব্য ছিল বিলের ধারে একটা বিশাল বটগাছ। বড় হয়েও যেভাবে গ্রামে গেলেই সেখানে হাজির হওয়ার তাড়া অনুভব করতাম, তাতে যেন তা একটা তীর্থস্থানের মতো হয়ে উঠেছিল। আমার জন্মেরও আগের এই বটগাছ, এর পেছনে একটা বড় বিল, সামনে মাঠ। দুই ঈদের জামাত হয় সেখানেই। ছোটবেলায় ঈদের সময় যখন গেছি, তখন এই জামাতেও অংশ নিয়েছি, দেখা যেত দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছে। সেই দৃশ্য অনুভূতি এখনো মনে আছে।
পুরো বছরেই সেই মাঠ ছিল আশপাশের বহুজনের প্রশান্তি বিনোদনের জায়গা। বটগাছের বিশাল ছায়া, অসংখ্য পাখির কিচিরমিচির আর অবিরাম নরম বাতাসের মধ্যে সেখানে দেখা যেত মাছ ধরতে ধরতে কেউ এসে বিশ্রাম নিচ্ছে, আশপাশের খেতে কাজ করতে করতে এখানে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে কেউ, আবার কখনো কখনো অলসভাবে গান গাইতে দেখা যেত খালিগা পরিশ্রমী মানুষদের। যাতায়াতের পথে এখানে কেউ নামাজ পড়ত। মানুষের পাশেই থাকত ক্লান্ত গরু, ছাগল, মহিষ। কুকুর, বিড়ালের জন্যও বাধা ছিল না। মাঝেমধ্যে গায়েনদের গানের আসরও বসত।