যথার্থ শিক্ষা

www.ajkerpatrika.com মামুনুর রশীদ প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২২, ১২:০৪

শিক্ষার বিষয়টি এখন সম্পূর্ণভাবে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত; যা শুধু মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়, ব্যাপকভাবে সামাজিক। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ আসার আগে শিক্ষাটি ছিল একটি সামাজিক বিষয়।


সমাজ তার নিজের প্রয়োজনে শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করেছিল।


সম্প্রতি এক রাতে অবসরে যাওয়া শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা হলো। ছাত্রজীবনে প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, শিক্ষক হিসেবে অত্যন্ত ভালো এবং শেষে শিক্ষা বিভাগের সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়ে অবসরে গেছেন। এখনো শরীরে-চোখে-মুখে তারুণ্য আছে এবং সেই সঙ্গে কৌতূহলও আছে। দেখতে দেখতে অবাক হচ্ছিলাম যে অবসরেও তিনি ক্লান্ত হননি। কিন্তু চাকরির ব্যস্ততার ফলে জগতের অনেক কিছুই তাঁর কাছে অচেনা এবং অজানা হয়ে আছে। তাঁর সঙ্গে কথায় কথায় আজকের সামাজিক অস্থিরতার কারণ হিসেবে শিক্ষার ব্যবস্থাকেই আমি দায়ী করছিলাম।


তিনি একমত হলেন। কারণ, তিনি সরকারি ও বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষকদের খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাঁদের চরিত্রের স্খলন, অশিক্ষা এবং সর্বোপরি শিক্ষকদের অনুপযুক্ততা খুব কাছ থেকে দেখেছেন। প্রচুর রাজনৈতিক চাপ সহ্য করেছেন তিনি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে চাপ অগ্রাহ্য করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মেনে নিতে হয়েছে। তাঁর পদটি শিক্ষাক্ষেত্রে ব্রিটিশ প্রবর্তিত ডিপিআইয়ের (ডিরেক্টর অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন) সমান। এ পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং যেসব মানুষ এই পদে থাকতেন তাঁরা পরবর্তীকালে হয় মন্ত্রী হতেন, উপদেষ্টা হতেন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হতেন। পদটিকে ঘিরে সরকার এমন একটা বর্ম তৈরি করত যে তার কাছে যাওয়াই যেত না। ফলে তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হতো।


বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক দিন পর্যন্ত এ পদটি গুরুত্ব বহন করে এসেছে। কিন্তু একটা সময় রাজনৈতিক বিবেচনা এত গুরুত্ব পেতে শুরু করল যে পদটি থাকল বটে, কিন্তু তার ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়টি সংকুচিত হতে লাগল। আজ যেমন সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষী, এ পদটির ক্ষেত্রেও তা-ই হলো। একদিকে কলেজগুলো অতিরিক্ত ছাত্রের চাপে বিধ্বস্ত, অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতির প্রবল চাপে অধ্যক্ষরা দিশেহারা। একাডেমিক শৃঙ্খলার বাইরেও কলেজের অধ্যক্ষকে অনেক ধরনের রাজনৈতিক কৌশল নিতে হয়। কিন্তু খোদ পাকিস্তান আমলেও অধ্যক্ষদের অনমনীয়তা, শিক্ষাক্ষেত্রে অবিচল মনোভাবে ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হলেও শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা একটুও কমেনি। জনান্তিকে ছাত্রনেতাদের বলতে শোনা গেছে, স্যার খুবই কঠিন ন্যায়বাদী।


তিনি আপস করবেন না এবং তাঁকে কিছুতেই অবনত করা যাবে না।


ওই শিক্ষকেরা ব্যক্তিগত জীবনেও ছিলেন অত্যন্ত অনমনীয় স্বভাবের। পরিবারের প্রতিও তাঁদের ছিল একই ধরনের মনোভাব। কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি তাঁদের স্পর্শ করত না। কিন্তু আজকাল অধ্যক্ষ তো দূরের কথা, উপাচার্যরা নিজের ছেলে, মেয়ে, জামাতাকে অন্যায়ভাবে অধ্যাপকের চাকরি দিয়ে থাকেন। হাল আমলের এক ছাত্রনেতা আমার কাছে এসে শিক্ষকদের সম্পর্কে অত্যন্ত কটু মন্তব্য করতে শুরু করলেন। আমি একটা পর্যায়ে তার সঙ্গে আলোচনা শেষ করে দিলাম। সম্প্রতি কাগজে দেখলাম, ভর্তি পরীক্ষায় সিংহভাগের ফি শিক্ষকেরা ভাগাভাগি করে নেন। শুধু তা-ই নয়, একটা বড় কলেজের অধ্যক্ষ বিভিন্ন পরীক্ষার কারণে বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করে থাকেন। শিক্ষকেরাও তার একটা ভাগ পেয়ে থাকেন। বিষয়গুলো এখন আর গোপন নেই। ছাত্র, শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি—সবটা মিলে যতটা না একাডেমিক চর্চা, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থনৈতিক চর্চায় মগ্ন হয়ে গেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও