বর্তমান পরিস্থিতিতে সঞ্চয়ের টাকা মানুষ কোথায় রাখবে
‘সারা জীবনের কষ্টের সঞ্চয়, কিছু টাকা জমানো আছে, কী করব ভাইয়া?’ ব্যাংক সঞ্চয়ের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে প্রশ্নটা ইদানীং করছেন অনেক অপরিচিতজন। কিন্তু যখন একজন সচিব পদমর্যাদার কেউ কিংবা বিসিএস কর্মকর্তা এমন প্রশ্ন করেন, তখন বুঝতে পারি, অনিশ্চয়তার গভীরতা বেশি! এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছে, ব্যাংকে টাকা রাখা নিরাপদ।
কী অদ্ভুত দেখেন, চেনা নেই, জানা নেই! অথচ নিজেদের আর্থিক সুরক্ষার গোপনীয় বিষয়ে মানুষ এতটা বিশ্বাস করে প্রশ্নটা রাখেন। এমন কঠিন প্রশ্ন প্রায় প্রতিদিনই পাই! কী করে উত্তর দিই! শেয়ারবাজারের কমিশনখোর, ক্রিপ্টোর ধান্ধাবাজেরা এসব প্রশ্নের উত্তর নিমেষেই দিতে পারেন। আমরা পারি না!
বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরেই ব্যাংক আমানতের সুদের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি। ফলে ব্যাংকে টাকা রাখলেই লোকসান। ব্যাংকে টাকা রাখলে সুদ পাওয়া যায় ৪ শতাংশের সামান্য বেশি, অথচ সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি, বেসরকারি হিসাবে আরও বেশি। তাই বছর শেষে প্রকৃত বিচারে আমানতকারীর কোনো লাভ নেই, বরং কর কর্তনের পর আরও এক ধাপ লোকসান! তাহলে করণীয় কী?
প্রথমেই বলি, দেশের আইনে যা অবৈধ, সেই পথে যাওয়া যাবে না। নিজের সঞ্চয় ব্যাংক থেকে তুলে তা দিয়ে বিদেশি মুদ্রা ডলার-ইউরো-পাউন্ড কিনবেন না দয়া করে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা ব্যাংকঋণ মেরে, প্রকল্প ব্যয় হাতিয়ে, চাঁদাবাজি, ঘুষ ও তদবিরের কালোটাকা ডলার বানিয়ে পাচার করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং কাঁচা টাকা দেশের ভেতরেও ফরেক্স ব্যবসায় লগ্নি করে ডলার-সংকটকে গভীর করেছে। অবাক হই, সাধারণ লোকে যখন প্রশ্ন করে, ডলার কিনে রাখব? অথচ বাংলাদেশ দ্বৈত মুদ্রা বৈধ করেনি।
- ট্যাগ:
- মতামত
- মূল্যস্ফীতি
- ব্যাংক আমানত