আইএমএফ-এর ঋণ ও শর্ত
বহুদিন পর কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একইদিন তাঁর মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে যে, সরকারি টাকায় সব প্রকার বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ।
দুটোই গুরুত্বপূর্ণ খবর। আইএমএফ এর এই ৪৫০ কোটি ডলার নিঃসন্দেহে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে সরকার যে চাপে রয়েছে তাকে কিছুটা সহজ করবে। প্রশ্ন উঠেছে আইএমএফ-এর ঋণের সাথে শর্ত সমূহ নিয়ে। সব শর্ত খারাপ এমন নয় আবার সব শর্ত মানাও যায় না।
একটি শর্ত হলো সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো। আইএমএফ চায় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আরও কমিয়ে আনুক বাংলাদেশ এবং এ হার অন্তত বাজারদরের কাছাকাছি থাকুক। এটি অবশ্যই একটি কঠিন শর্ত। কারণ একে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতের বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর একটি রাজনৈতিক গুরুত্বের দিকও সরকারের কাছে রয়েছে।
সুতরাং চাইলেই সুদের হার কমানো যাবে না। তবে সঞ্চয়পত্রে সরকার কিছু সংস্কারও করেছে যেমন, ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের বিপরীতে যে সুদ দেওয়া হয়, তা প্রায় বাজারদরের সমান। আর এখন তিনটি আলাদা সুদের হার করা হয়েছে। তা ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনায় অনলাইন পদ্ধতি চালু, সঞ্চয়পত্রে বেশি বিনিয়োগে করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকার শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
আইএমএফ, বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পরামর্শ যৌক্তিকই বলতে হবে। তবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণের কিস্তি না দিলে ৯০ দিনের মধ্যে খেলাপি করার আইএমএফ এর প্রস্তাব-কে কঠিন হিসেবে বিবেচনা করছে ব্যাংকাররা।