বিশ্বকাপ ক্রিকেট থেকে কী শিখলাম আমরা?
ফোন বাজছে। আমার এক বন্ধু ফোন করেছে। এত সকালে সাধারণত সে ফোন করে না। কোনও কাজ না থাকলে তার সকাল শুরু হয় ১১টার পর। দেশে রাত জেগে কাজ করার একটা ট্রেন্ড চালু হয়েছে। অনেকের কাছে গভীর রাতে আড্ডা দেওয়াও একটা কাজ। আজকাল আড্ডা দিতে পাশে মানুষ লাগে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একই নেটওয়ার্কে অনেকের সঙ্গে সহজেই আড্ডা দেওয়া যায়। পাশাপাশি নিমিষেই ঘুরে আসা যায় পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে। রাত জেগে ফেসবুকে পৃথিবী ঘোরার মজা নেন অনেকে। আমার বন্ধুটির যত কাজ রাতে। ওর অফিস জানে ব্যাপারটা। অফিসের কাজে সে বেশ সিরিয়াস। যারা সারা দিন অফিসে থাকে তাদের অনেকের চেয়ে দিনের অর্ধেক সময় অফিস করে শতভাগ দায়িত্ব সম্পন্ন করে সে। এজন্য অফিস কিছু বলে না।
আমার সেই বন্ধু ফোন করেছে। আমি অবাক এবং ভীতও বটে। উৎকণ্ঠা নিয়ে জানতে চাইলাম– এত সকালে তোর ঘুম ভাঙলো? কোনও দুঃসংবাদ?
বন্ধু আনন্দে বেশ উত্তেজিত। বললো, দুঃসংবাদ নয় একটা সুসংবাদ আছে।
সুসংবাদ, কী?
সাউথ আফ্রিকা তো নেদারল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে। অবাক হয়ে জানতে চাইলাম– এটা আমাদের জন্য কি করে সুসংবাদ হয়? বুঝিয়ে বল...।
বন্ধু উত্তেজনা কমাতে পারছে না। বরং আগের চেয়ে আরও বেশি উত্তেজিত কণ্ঠে বললো– তুমি কি আসলেই ব্যাপারটা বুঝতে পারছো না? আজ বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের ক্রিকেট লড়াই। নেদারল্যান্ডের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার খেলার ফলাফলের ওপর নির্ভর করেছিল বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের খেলাটা নিছক একটা খেলা থাকবে কিনা। নেদারল্যান্ড যদি দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারে তাহলে বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের খেলাটা নিছক নিয়ম রক্ষার খেলা থাকবে না, সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়েও পরিণত হবে। আনন্দের খবর হলো, দক্ষিণ আফ্রিকা নেদারল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে। কাজেই আমাদের বাংলাদেশের সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এবার তোমার কাছে বিষয়টা কি পরিষ্কার?
নেদারল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার খেলার খবর ইচ্ছে করেই রাখিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে নেদারল্যান্ড পারবে না এটাই ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু ক্রিকেট মূলত অনিশ্চয়তার খেলা। মাঠে ভুল করলে বড় দলও ছোট দলের কাছে অসহায়ভাবে হারে। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ