শাসন বিভাগই ক্ষমতাধর বিচার বিভাগ কোণঠাসা
রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় পাকিস্তানের বুক চিরে। পাকিস্তানের জন্ম আবার ব্রিটিশের ঔপনিবেশিক আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভেতর থেকে। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা এবং জাতির জনক হিসেবে খ্যাত মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ যে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন এটা ছিল অবধারিত; আর তিনি যে প্রধানমন্ত্রী না হয়ে রাষ্ট্রপতি হলেন এর ভেতরে এই সত্য প্রতিফলিত ছিল যে বাইরে অত্যন্ত গণতান্ত্রিক হলেও ভেতরে তিনি ছিলেন ভীষণ আমলাতান্ত্রিক। সে সময়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন লিয়াকত আলী খান। তিনিও ছিলেন মনেপ্রাণে আমলাতান্ত্রিক; গণতন্ত্রের কথা যারা বেশি বেশি বলত তাদের তিনি কমিউনিস্ট হিসেবে চিহ্নিত করতে পছন্দ করতেন। রাষ্ট্রের ভেতরে সর্বাধিক ক্ষমতাধর ছিল সামরিক বাহিনী; জিন্নাহ নিজে ওই বাহিনীর গঠন বিষয়ে অত্যধিক আগ্রহী ছিলেন।
আর সামরিক আমলাতন্ত্র ছিল অসংশোধনীয়রূপে রক্ষণশীল, তারা লিয়াকত আলী খানের বেসামরিক আমলাতান্ত্রিকতাকে সহনীয় মনে করেনি; লিয়াকত আলী তাই নিহত হয়েছেন। এবং সামরিক বাহিনীর নেতা আইয়ুব খান রাষ্ট্রক্ষমতা করতলগত করার দিকে অগ্রসর হয়েছেন। অসামরিক আমলা গোলাম মোহাম্মদ ও চৌধুরী মোহাম্মদ আলী রাষ্ট্রক্ষমতায় কিছুকাল ছিলেন; প্রথম জনের মৃত্যু এবং দ্বিতীয় জনের পতনের পর আইয়ুব খান সরাসরি ক্ষমতায় বসে যান। তারপরে আসেন ইয়াহিয়া খান, তার সামরিক পদক্ষেপ পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশের উত্থানকে ত্বরান্বিত করে। আমলাতন্ত্র কী না পারে!