চেক জালিয়াতিতে লুট পৌনে ৭ কোটি টাকা
চেক জালিয়াতির মাধ্যমে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পৌনে সাত কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন বোর্ডের ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে মোট লুট করা হয় ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৯১ টাকা। অর্থ লুট করতে নথিতে ইস্যু করা টাকার চেয়ে কয়েক গুণ লেখা হতো চেকের পাতায়। অবাক করা বিষয় হলো, হিসাব শাখার যাঁরা চেকের পাতা প্রিন্টারে প্রিন্ট করতেন, তাঁরাই জালিয়াতি করেছেন এবং তাঁরাই আবার নিরীক্ষা শাখার হয়ে অডিট করেছেন। ফলে তিন বছর ধরে অর্থ লুট চললেও ধরা পড়েনি কিছুই। বিভিন্ন ব্যক্তি ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৩৮টি চেকের মাধ্যমে ওই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্ত প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সরেজমিন তদন্ত করে গত ১৬ অক্টোবর প্রতিবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে জমা দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর সমকালকে বলেন, তদন্তকালে যশোর বোর্ডের প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা প্রকটভাবে আমাদের চোখে পড়েছে। চেক জালিয়াতিতে জড়িত একজন কর্মচারী এর আগে বোর্ডের কাছে লিখিতভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনানুগ শাস্তি হওয়া জরুরি।
প্রতিবেদনে বিপুল এই অর্থ লুটের জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডের নিম্নমান সহকারী ও ক্যাশিয়ার (বর্তমানে জুনিয়র অডিটর) মো. জুলফিকার আলী, উচ্চমান সহকারী ও ক্যাশিয়ার মো. মোমিন উদ্দিন, সহকারী প্রোগ্রামার মুরাদ হোসেন, হিসাব সহকারী মো. আবদুস সালাম, সহকারী সচিব (কমন) মো. আশরাফুল ইসলাম ও সহকারী মূল্যায়ন অফিসার আবুল কালাম আজাদকে দায়ী করা হয়েছে। এ ঘটনায় যশোর বোর্ডের সাবেক দুই চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন ও মোহাম্মদ আব্দুল আলীম এবং সাবেক দুই সচিব এ এম এইচ আলী আর রেজা ও মো. তবিবার রহমান সম্পর্কে বলা হয়েছে, তাঁরা চেক জালিয়াতির দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। তা ছাড়া তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে বোর্ডের প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার দায়ও তাঁরা এড়াতে পারেন না বলে মনে করে তদন্ত দল।