পিরোজপুরের প্রবীণ ও আজকের তারুণ্য
শিশু এবং প্রতিবন্ধীদের যেকোনো উদ্যোগ এবং পরিকল্পনায় আমি যুক্ত হতাম। আমার কর্মপরিধি নাট্য-সংক্রান্ত কিন্তু এর বাইরেও কখনো যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতাম। শিশু-কিশোরদের নিয়ে আমি খুব একটা নাটক করতে পারিনি কিন্তু কেউ উদ্যোগ নিলে তার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতাম। কিছুদিন হলো জীবনের আরেকটি দিগন্ত আমার কাছে ধরা দেয়। আমি আবিষ্কার করি আমি নিজে প্রবীণ এবং আমার মতো লাখো কোটি প্রবীণেরও নানা সমস্যা আছে। তাই সেই সমস্যার দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি।
এ সময় একটি প্রতিষ্ঠান আমাকে প্রবীণদের একটা কর্মস্থলে নিয়ে যায়। ঢাকা থেকে বেশ দূরে পিরোজপুরে। এও আমি আবিষ্কার করি প্রবীণদের একটা বড় সমস্যা নিঃসঙ্গতা। আবার এও তো স্বাভাবিক বাবা-মা সাধারণত কারও জীবিত থাকে না। কারও কারও ভাই-বোনদের সংসার গড়ে উঠেছে। ছেলেমেয়েরা তো আলাদাই হয়ে গেছে। কারও ছেলেমেয়ে প্রবাসে। ক্ষীণ যোগাযোগ শুধু হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে। এই নিঃসঙ্গতা তো স্বাভাবিক। আমরা দেখেছি পাশ্চাত্য দেশগুলোতে বহু আগে থেকেই মানে প্রবীণ হওয়ার আগেই তারা নিঃসঙ্গ হয়ে গেছে। একের পর এক ছেলে বা মেয়ে বন্ধু অথবা একাধিক বিয়ের ফলে তাদের কোনো সামাজিক বন্ধন হচ্ছে না। একটা প্রবাদ আছে বাল্যকালে রাশিয়া, যৌবনে জাপান এবং বার্ধক্যে ভারতবর্ষ একটি আদর্শ জীবনযাপনের জায়গা। আমরা সেই প্রাচীন ভারতবর্ষ বা বর্তমানে এ উপমহাদেশের মানুষ। আমাদের পারিবারিক বন্ধন আছে। ছোটবেলা থেকেই অনেকগুলো ভাই-বোন একসঙ্গে বড় হয়েছি। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারেও এক চৌকিতে দ্-ুতিন ভাই ঘুমিয়েছি। এক ডিম দুভাগ করে খেয়েছি। পরবর্তীকালে বিবাহিত জীবনেও নিজের বাড়ি ও শ^শুরবাড়ি মিলে একটা যৌথ জীবনযাপন করেছি। একসময় এই যৌথ জীবন ভেঙে যায়। বড় পরিবারে থেকে আমরা একটি ছোট পরিবারে প্রবেশ করি। এক ছেলে এক মেয়ের পরিবার।