‘তবু মনটায় চায় মানুষের জন্য কিছু করি’
‘পড়াশোনায় আমি একদম বকলম। মানে, পড়াশোনা একেবারে করি নাই। আমি দরিদ্র ঘরের সন্তান। একসময় ভাত খাওনের লাইগ্যা মায়ের কাছে কান্দিতাম। এখনো আমার অবস্থা খুব বেশি ভালো না। আমি সিএনজি চালাই। তবে শুক্রবারে যা আয় করি, তা আর নিজের সংসারের পেছনে খরচ করি না। ওই টাকা জমাইয়্যা জন্মগত প্রতিবন্ধী মানুষকে হুইলচেয়ার কিন্যা দেওয়ার চেষ্টা করি। মানুষরে খাবার কিন্যা দিই। অনেকে অবাক হয়। বলে, সিএনজি ড্রাইভার এমন কাজ করে। অনেকে আবার মনে করে, বাটপারি করতাছি।’
কথাগুলো বললেন সিএনজি অটোরিকশাচালক মো. আমজাদ আলী। ২০১৯ সাল থেকেই তিনি শুক্রবার সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করেন, তা দিয়ে বিভিন্ন মানুষের সেবা করার চেষ্টা করছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১৬ জনকে হুইলচেয়ার কিনে দিয়েছেন। চলতি পথে যদি মনে হয় কারও ভাড়া দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তিনি বিনা ভাড়ায় তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছে দেন। অভুক্ত মানুষকে খাবার কিনে দেন।
আমজাদ আলী বললেন, ‘আমি গরিব সিএনজিচালক, তবু মনটায় চায় মানুষের জন্য কিছু করি।’ আমজাদ আলীর একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে। একটি ফেসবুক পেজও আছে। আমজাদ আলী নিজে পড়াশোনা করেননি, তাই তাঁর পরিচিতজন বা মাঝেমধ্যে সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীদের সহায়তায় ফেসবুকে কাকে হুইলচেয়ার দিলেন বা খাবার দিলেন, তার তথ্য দিয়ে রাখেন। ইউটিউবারদের কেউ কেউ আমজাদ আলীর বিভিন্ন কাজের ভিডিও করে তা আপলোড করেন। তবে এ নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই আমজাদ আলীর। তাঁর ভাষ্য, তিনি নিজে কোনো লাভের জন্য কাজগুলো করেন না। তবে তাঁর কাজের কথা প্রচার হলে যাঁদের আসলেই হুইলচেয়ার প্রয়োজন, তাঁরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। ইউটিউবাররা যদি এ থেকে কোনো লাভ করেন, করুন।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- চালক
- সিএনজি চালিত অটোরিকশা