![](https://media.priyo.com/img/500x/https://cdn.ajkerpatrica.net/contents/cache/images/720x0x1/uploads/media/2021/10/23/d4d4dee251425eabf6bf171ec8f0533d-617362de9bc27.jpg)
প্রধানমন্ত্রীর তাৎপর্যপূর্ণ ভারত সফর
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে (৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর) ভারত সফরে গিয়েছেন। নানা দিক থেকেই প্রধানমন্ত্রীর এ সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে অসংখ্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যু। সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন, বাংলাদেশ কতটুকু কী আদায় করতে পারল। বিরোধপূর্ণ ইস্যুগুলোর কতটুকু কী হলো। এবারও প্রধানমন্ত্রীর সফরে এই প্রত্যাশার প্রতিফলন লক্ষ করা যাচ্ছে।
প্রায় তিন বছর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফর করছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য নির্বাচনের আগের বছরে শেখ হাসিনার এই সফরের গুরুত্ব নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এখানে বলে রাখা ভালো, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। প্রায় একই রকম সংস্কৃতি, একই শাসকের অধীনে শাসিত হওয়ার ঐতিহ্যের কারণে ভারতের ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষের এক জটিল মনস্তত্ত্ব কাজ করে। এটা একই সঙ্গে ভালোবাসা ও বিরোধের। প্রেম ও বিদ্বেষের।
ভারতীয় পোশাক, প্রসাধনী, সিনেমা, গান, টিভি অনুষ্ঠান, লেখাপড়া, চিকিৎসা বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের এখনো প্রিয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের রাগ-ক্ষোভ-ঘৃণাও ভারতের প্রতিই বেশি।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভিত রচিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সরকার ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের মধ্য দিয়ে। এ কথা ঠিক যে ভারতের সাহায্য ও সমর্থন না পেলে বাংলাদেশের পক্ষে হয়তো নয় মাসে স্বাধীনতা লাভ করা সম্ভব হতো না। সে জন্য বাংলাদেশের মানুষের ভারতের প্রতি একধরনের কৃতজ্ঞতা রয়েছে। আবার বাংলাদেশের ‘ন্যায্য হিস্যা’ প্রদানে অনীহা আর ‘দাদাগিরি’র কারণে প্রতিবেশী এই রাষ্ট্রটির প্রতি আমাদের দেশের মানুষের বিদ্বেষও কম নেই। মাঝে মাঝে তা বেশ প্রকটভাবেই প্রকাশ পায়।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশি নাগরিকদের যেমন ভারতে যাওয়ার সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে, তেমনি ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সংখ্যাও বেড়েছে। ভারত সরকার বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা দেওয়ার বিষয়টি আগের তুলনায় সহজ করেছে। গত এক দশকে নানা সন্দেহ, অবিশ্বাস, বঞ্চনার অনুভূতি সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। এই সময়ে দুই দেশ যেসব বিষয়ে চুক্তি করেছে, সেটি একটি সময়ে অনেকে ভাবতেও পারেননি। এ সময়ের মধ্যে ভারতে সরকার বদল হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে এখনো কোনো ভাটা পড়েনি। ছিটমহল বিনিময়, ভারতকে সড়কপথে ট্রানজিট দেওয়া, চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া, ভারত-বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা চুক্তি কিংবা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে বাংলাদেশের সহায়তা—এই সবকিছুতে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর