অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতা রক্ষার সফর
প্রায় তিন বছর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের গুরুত্ব এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের তাৎপর্য তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপতি ভবনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে দুই প্রধানমন্ত্রী হায়দরাবাদ হাউসে আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য যান।
এর আগে একান্তভাবে কথা বলেন তাঁরা, যা রাষ্ট্রাচারের অংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের প্রথম দিনে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে এর আগে আলোচিত সাতটি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো। বাংলাদেশ ও ভারত যে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে সেগুলো হলো—কুশিয়ারা নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলনের জন্য সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ ও ভারতের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক, ভারতের ভুপালের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি ও বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের ভারতে প্রশিক্ষণের জন্য সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ ও ভারতের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও প্রসার ভারতীর মধ্যে সমঝোতা স্মারক, স্পেস টেকনোলজি বা মহাকাশ প্রযুক্তি খাতে সমঝোতা স্মারক। এমওইউ স্বাক্ষরের মাধ্যমে আপাতদৃষ্টিতে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হলেও এর ধারাবাহিকতায় অপরাপর কিছু বিষয়; যেমন—কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট বা সেপা, ভারত থেকে বাংলাদেশে তেল রপ্তানি, বাণিজ্যবৈষম্য দূরীকরণে নানামুখী উদ্যোগ, যা চলমান রয়েছে—এই সব কিছু ভবিষ্যতে একটি নতুন মাত্রা লাভ করবে বলে আশা করা যেতেই পারে। বাস্তবিক অর্থে সম্পর্ক এবং বন্ধুত্বের ধারাবাহিকতা যদি অক্ষুণ্ন থাকে, তাহলে যেকোনো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি ভিন্নতর উচ্চতায় যেতে পারে।