পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: দাম বাড়ল তরল দুধের
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রতিযোগিতায় এবার যোগ হলো পাস্তুরিত তরল দুধ। দু-তিনটি দুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করার প্রতিষ্ঠান পুষ্টিকর এই তরল খাদ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে শুরু করেছে। অন্যরা ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাড়তি দামে বিক্রি করার কথা বলেছে।
দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে তরল দুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান বা কম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গোখাদ্যের দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
এর সঙ্গে খামারিদের দুধ উৎপাদনসহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে। এতে খামারিদের বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। দুধ প্যাকেটজাত করার খরচও আগের চেয়ে বেশ বেড়েছে। এসব কারণে তারা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। খামারিরা অবশ্য বলছেন, কম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে দুধ বিক্রি করলেও তাঁদের কাছ থেকে এখনো আগের দরে, অর্থাৎ ৪২ থেকে ৪৫ টাকা দরেই কিনছে।
চলতি বছরের মে মাসে প্রতি লিটার প্যাকেটজাত তরল দুধে ১০ টাকা বাড়িয়েছিল কম্পানিগুলো। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে আবার এই দুধের দাম বাড়ানো হলো।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ২৬ আগস্ট উৎপাদিত এক লিটার আড়ং ডেইরি তরল দুধের দাম ৯০ টাকা উল্লেখ রয়েছে। আগের উৎপাদিত দুধের মোড়কে লেখা দাম ছিল ৮০ টাকা। প্রাণের এক লিটার তরল দুধের মোড়কেও ৯০ টাকা লেখা। তবে একই দিন উৎপাদিত মিল্ক ভিটার দুধের দাম বাড়েনি। এক লিটারের মোড়কে ৮০ টাকাই লেখা। দোকানিরা বলছেন, দু-তিনটি দুধ সরবরাহকারী কম্পানি তরল দুধের দাম বাড়িয়েছে। বাকিগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা শিগগিরই দাম বাড়ানো হবে বলে জানিয়ে গেছেন।
গতকাল রাজধানীর দক্ষিণ কুড়িল এলাকার মুদি দোকান বিসমিল্লাহ স্টোরের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুই দিন আগেও আড়ংয়ের এক লিটার তরল দুধের দাম ছিল ৮০ টাকা। ১০ টাকা বাড়িয়ে এটি এখন ৯০ টাকা করা হয়েছে। প্রাণ কম্পানির এক লিটার তরল দুধের দাম ছিল ৮৫ টাকা। পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৯০ টাকা করা হয়েছে। আজ (গতকাল) মিল্ক ভিটার বিক্রয় প্রতিনিধি বলে গেছেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁদের দুধের দামও বাড়বে। ’
একের পর এক খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ভোক্তারা খাদ্য তালিকাও ছোট করছে। ভোক্তারা বলছে, এখন আর দাম বাড়তে বাকি নেই কোনো জিনিসের। সংসারের আয় ও ব্যয়ের হিসাব মেলাতে না পেরে খাদ্যতালিকা থেকে বেশ কিছু নিত্যপণ্য বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানায় তারা।
বরিশাল বিভাগ ও ভোলা জেলা ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান খোকন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে শুধু মিল্ক ভিটা দুধ কেনে। প্রতি লিটারে দাম ধরা হয় ৪৫ টাকা। এখন দুধের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই দরের সঙ্গে আমাদের উৎপাদন খরচের সমন্বয় হচ্ছে না। যে কারণে অনেকে খামার বন্ধ করে দিয়েছে। দুধের দাম বাড়াতে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এবং আমরা সরাসরি মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ’
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রবিউল দুগ্ধ খামার ও জুয়েল দুগ্ধ খামার আড়ং ও মিল্ক ভিটার কাছে নিয়মিত দুধ বিক্রি করে। রবিউল দুগ্ধ খামারের মালিক মো. রবিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি মিল্ক ভিটার কাছে নিয়মিত দুধ বিক্রি করছি, কম্পানিটি আমার কাছ থেকে প্রতি লিটার দুধ কিনছে ৪৫ টাকা করে। ’
- ট্যাগ:
- ব্যবসা ও অর্থনীতি
- মূল্যবৃদ্ধি
- তরল দুধ