তথ্য ফাঁসকারীর সাক্ষ্যে প্রশ্নবিদ্ধ টুইটার ও ভারত সরকার
ভারত সরকার টুইটারকে চাপ দিয়ে একজন সরকারি ‘এজেন্টকে’ কোম্পানির বেতনভুক্ত পদে নিয়োগ দিতে বাধ্য করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
বলা হচ্ছে, ব্যবহারকারীদের স্পর্শকাতর ডেটায় প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন ওই ভারতীয় ‘এজেন্ট’। প্ল্যাটফর্মের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও বাজার পর্যবেক্ষক এবং সেবাগ্রাহকদের কাছে ‘মিথ্যাচার’ করেছে টুইটার।
আলোচিত এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিরুদ্ধে এমন আরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন কোম্পানির সাবেক নিরাপত্তা প্রধান।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিভাগ, ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সেচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)’ এবং ‘ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) কাছে জমা দেওয়া সাক্ষ্যে টুইটারকে গণতন্ত্র এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ‘ঝুঁকি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন কোম্পানির সাবেক ‘হেড অফ সিকিউরিটি’ পিটার জ্যাটকো।
বট অ্যাকাউন্টের সঠিক সংখ্যা নিয়ে টুইটার ইলন মাস্কের কাছে ‘মিথ্যা বলছে’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
জুলাই মাসেই এসইসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন জ্যাটকো। তার অভিযোগ ও সাক্ষ্যের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ দেখার সুযোগ হয়েছে বিবিসি ও সিবিএসের মতো প্রথমসারির একাধিক সংবাদমাধ্যমের। ২৩ অগাস্ট সিএনএনে সাক্ষাৎকার দিয়ে জ্যাটকো আবির্ভূত হয়েছেন একজন ‘হুইসেল ব্লোয়ার’ হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজার পর্যবেক্ষক সংস্থার কাছে দেওয়া সাক্ষ্যে জ্যাটকো অভিযোগ করেছেন, একজন সরকারি ‘এজেন্টকে’ টুইটারের স্থানীয় কার্যালয়ে বেতনভুক্ত পদে নিয়োগ দিতে বাধ্য করেছিল ভারত সরকার। আর কোম্পানির দুর্বল নিরাপত্তা অবকাঠামোর কারণে সেবাগ্রাহকদের গোপন ও স্পর্শকাতর ডেটায় সহজেই প্রবেশাধিকার পাওয়ার কথা ওই ভারতীয় এজেন্টের।
টুইটারে ভেতরেও একই ধরনের অভিযোগ শোনা গেছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন কোম্পানিরই এক কর্মকর্তা। তবে, বার্তাসংস্থাটিকে এ প্রসঙ্গে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি ওই ব্যক্তি।
জ্যাটকোর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তাতে সাড়া দেয়নি মন্ত্রণালয়।
জ্যাটকোর অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া বিবৃতিতে টুইটারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা এখন পর্যন্ত যা দেখছি, তা হল টুইটার এবং আমাদের গোপনতা ও ডেটা নিরাপত্তা চর্চা নিয়ে মিথ্যাচার যা অসঙ্গতি ও ভুলত্রুটিতে ভরা এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক তথ্যের অভাবও আছে এতে।”
ভারতের স্থানীয় আদালতে আইনি লড়াই চলছে টুইটার ও দেশটির সরকারের মধ্যে। প্ল্যাটফর্মটিকে নির্দিষ্ট কিছু কনটেন্ট মুছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ভারত সরকার। এর বিরুদ্ধে স্থানীয় আদালতের শরণাপন্ন হয় টুইটার কর্তৃপক্ষ। ভারত সরকারের কর্মকর্তারা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।