কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও তার শত্রুপক্ষ

দেশ রূপান্তর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২২, ১০:১৩

বাংলাদেশে বিজ্ঞান বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে উন্নত প্রযুক্তি, বড় বড় আবিষ্কার আর মানুষের সুখ-ভোগের নানান পণ্য। অর্থাৎ বিজ্ঞান মানে প্রযুক্তি। এটাই প্রধান ধারা। আদতে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি মোটেও প্রযুক্তিগত কোনো ব্যাপার নয়, এটা মূলত বুদ্ধিবৃত্তিক। যেহেতু বৈজ্ঞানিক-দৃষ্টিভঙ্গি একান্তই সংস্কৃতির একটা অংশ, তাই একই সঙ্গে এটা ব্যক্তিগত এবং সমষ্টিগতভাবে অর্জিত সম্পত্তি। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যায়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বিকাশের জন্য প্রয়োজন ব্যাপক সামাজিক ভিত্তি, এমনকি যদি ওই ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো কাঠামো পিরামিডসদৃশও হয়। অবস্থাভেদে বিজ্ঞান নিয়ে কখনো উচ্চকিত আবার স্তিমিত আলোচনা হলেও এগুলো প্রায়ই বৈজ্ঞানিক নয়। বাংলাদেশে সঠিক বৈজ্ঞানিক-দৃষ্টিভঙ্গির প্রধান শত্রু হচ্ছে দুই সুপরিচিত সখা পুঁজিতন্ত্র এবং সামন্ততন্ত্র। এরা হাত ধরাধরি করে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক উপাদানগুলোর বিরুদ্ধে তৎপর রয়েছে।


বিজ্ঞান ও পুঁজিবাদের মধ্যে অদ্ভুত এক ভালোবাসা ও ঘৃণার সম্পর্ক বিদ্যমান। বিজ্ঞান পুঁজিতন্ত্র বিকাশ ও প্রসারে সহযোগিতা করেছে। পুঁজিতন্ত্র সমাজ বিকাশের ধারায় গড়ে ওঠে। তাই একে বিজ্ঞানের তৈরি বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে বিজ্ঞানের অসংখ্য আবিষ্কার ও উৎপন্ন দ্রব্য পুঁজিতন্ত্র লাভজনক কাজে ব্যবহার করে নিজেকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলছে। অন্যদিকে পুঁজিতন্ত্র যে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিম-ল সৃষ্টি করে তা বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বিকাশের অনুকূল। বিজ্ঞান ও পুঁজিতন্ত্র তাই যৌথভাবে মানুষের জন্য এক বিকশিত পৃথিবী সৃষ্টি করেছে। কারিগর তার ছোট ওয়ার্কশপে কাজ করে এবং বিজ্ঞানী তার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একে অপরের সহযোগিতায় সম্ভবত তাদের অজান্তেই শিল্পবিপ্লব সম্ভব করে তুলেছে। তবে একই সঙ্গে পুঁজিতন্ত্র বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সুফল মানবজাতির কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেও সচেষ্ট। কেননা, পুঁজিতন্ত্র বিজ্ঞানকে তার দাসে পরিণত করতে তৎপর। সে পণ্য চায়, কিন্তু পণ্য উৎপাদনে যে মনন ভূমিকা রেখেছে তার বিকাশ চায় না। এভাবেই সে বিজ্ঞানের আবিষ্কার বাজারের পণ্যে পরিণত করেছে। পুঁজিবাদ বস্তুবাদকে দর্শনগত দিকে না নিয়ে গিয়ে বরং নিছক স্থূল ভোগের উৎস হিসেবে ব্যবহার করে ভোগবাদিতার অভিমুখে টেনে নিয়ে পুঁজিবাদ সমাজে বিচ্ছিন্নতার বিকাশ ঘটিয়েছে। যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির বা সামষ্টিকতা, যা বৈজ্ঞানিক কাজকর্মের প্রয়োজনীয় ভিত্তি গড়ে তুলে পুঁজিতন্ত্র বিজ্ঞানের বিকাশকে প্রতিহত করে। পুঁজিতন্ত্র বিজ্ঞানীকে চায় তার কর্মচারী হিসেবে কিন্তু বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশকে সে ভয় করে। কেননা, বিজ্ঞান শোষণবিরোধী, কিন্তু পুঁজিতন্ত্র শোষণ ছাড়া টিকে থাকতে পারে না। এজন্য পুঁজিতন্ত্র শোষণ করার লক্ষ্যে শোষিত মানুষের ভেতর সামন্তবাদী মূল্যবোধকে গড়ে তুলে তা টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করে; এটা একটা প্রদীপ, যার তলায় রয়েছে ঘোর অন্ধকার। বিজ্ঞান একটি বৈপ্লবিক শক্তি। একসময় পুঁজিবাদও বৈপ্লবিক ছিল তবে বর্তমানে নয়। আর তাই পুঁজিবাদ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে যাচ্ছে, সৌভ্রাতৃমূলক সম্পর্কের বদলে বিজ্ঞানের সঙ্গে শত্রুতামূলক সম্পর্ক সৃষ্টি করছে।


বাংলায় পুঁজিতন্ত্র সমাজ বিকাশের অভ্যন্তরীণ ধারায় গড়ে ওঠেনি বরং বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে, দেশের উৎপাদিকা শক্তির মুক্তিতে ইতিবাচক ভূমিকা না রেখে এক অবরুদ্ধ সমাজের সৃষ্টি করে, যা পুঁজির পুঞ্জিভবন সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। বিকাশমান টেক্সটাইল, রেশম, লবণ ও জাহাজ নির্মাণশিল্পের বিকাশ শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। কৃষিকে ততটা উৎসাহিত করা হয়, যতটা অর্থকরী ফসল উৎপাদনে প্রয়োজন ছিল এবং শিল্প বিকাশে বাধা হয় এই উভয়বিধ প্রয়োজনে।


এটা সবারই জানা সমুদ্র সভ্যতা বিনির্মাণে ভূমিকা রেখেছে, যা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে অবদান রেখেছে, চলাচল ও ব্যাপকতার সামর্থ্য বিশেষত ব্যবসা-বাণিজ্যে। সমুদ্রের সাংস্কৃতিক অবদান প্রমাণ করে সাগর আকাশ থেকে অনেক বেশি কার্যকর। আকাশ মূলত ব্যক্তির, সাগর সমষ্টির। বাংলার সমুদ্র রয়েছে কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই সমুদ্র বণিক ও জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এই ভূমির দুই প্রান্ত পাহাড় ও পর্বত দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং অপর প্রান্ত অনুপ্রবেশকারীর দখলে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও