কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আমলার ‘মাস্তানের চেয়ে খারাপ ভাষা’ হওয়ার কারণ

বাংলা ট্রিবিউন জাহেদ উর রহমান প্রকাশিত: ০৩ আগস্ট ২০২২, ২১:০৮

‘নিচু জায়গায় নির্মাণ করা উপহারের ঘর পানিতে ভাসছে’ শিরোনামে কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় নিচু জমিতে উপহারের ঘর নির্মাণ নিয়ে সেখানকার ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি অনলাইন নিউজপোর্টাল, ঢাকা পোস্ট। পোর্টালটির কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধির করা ওই সচিত্র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা হোয়াব্রাং এলাকার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সব নতুন ঘর পানিতে ভাসছে। ফলে সেখানে থাকা ২৭টি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।’


এর পরপরই ওই উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু এই সাংবাদিককে তার অফিসিয়াল নম্বর থেকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া অডিওটিকে ভিত্তি করে সংবাদ প্রকাশ করেছে অনেক গণমাধ্যম। ভাষাটা আমাদের হাইকোর্টের কাছে এতই ভয়ংকর মনে হয়েছে যে একজন আইনজীবী এই সংবাদটি হাইকোর্টের নজরে আনলে হাইকোর্ট বলেছেন–


‘একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ও আপত্তিকর। কোনও রং হেডেড ব্যক্তি ছাড়া কেউ এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করতে পারেন না।....সংবাদ প্রকাশ নিয়ে ইউএনও যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা খুবই অবজেকশনেবল ও দুঃখজনক। তিনি একজন মাস্তানের চেয়েও খারাপ ভাষা ব্যবহার করেছেন।’


রিপোর্টটিকে কেন্দ্র করে যা যা হলো তার প্রতিক্রিয়ায় জেলা প্রশাসক গিয়েছিলেন সরেজমিন প্রকল্পের অবস্থা দেখতে। সেখানে তিনি নিশ্চিত হন প্রকল্পের বাড়িগুলো অবশ্যই বেশ নিচু জায়গায় হয়েছিল, ফলে জোয়ারের সময় সেগুলোতে পানি উঠে যায়। অর্থাৎ রিপোর্টটির সত্যতা আছে। তারপরও আমরা তর্কের খাতিরে ধরে নিই, ওই গণমাধ্যমের সাংবাদিক ‘হলুদ সাংবাদিকতা’ করেছেন।


সব সাংবাদিক ধোয়া তুলসী পাতা নন। কোনোকালে, কোনও দেশে সব প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সব সাংবাদিক কিংবা মালিক ধোয়া তুলসী পাতা ছিলেন না। সত্য লুকানো, সত্য বিকৃত করা, সংবাদের উদ্দেশ্যমূলক ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে চাঞ্চল্য বাড়িয়ে তোলা, নানা রঙচঙে উপস্থাপনার মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো অপেশাদার, এমনকি অনৈতিক সাংবাদিকতার ইতিহাস অনেক পুরনো। হ্যাঁ, এমন সাংবাদিকতাকেই আমরা ‘ইয়েলো জার্নালিজম’ নামে চিনি।


১৮৯০-এর দশকে জোসেফ পুলিৎজারের মালিকানার ‘নিউ ইয়র্ক ওয়ার্ল্ড’ এবং উইলিয়াম হার্স্টের মালিকানার ‘নিউ ইয়র্ক জার্নাল’-এর মধ্যে সার্কুলেশন বৃদ্ধির জন্য এক অসুস্থ প্রতিযোগিতার জেরে সংবাদ নির্বাচন, প্রকাশ এবং প্রচারের ধরনে যে অনৈতিকতা শুরুর প্রেক্ষাপটে ইয়েলো জার্নালিজম শব্দগুলো ব্যবহৃত হতে শুরু করলেও এই চর্চা আরও আগেও কম-বেশি ছিল। বর্তমান বাংলাদেশে সার্বিকভাবে নৈতিকতার যে স্খলন তৈরি হয়েছে সেটা আর সব সেক্টরের মতো প্রত্যাশিতভাবেই প্রভাবিত করেছে সাংবাদিকতাকেও।


বর্তমান বাংলাদেশে ‘ইয়েলো জার্নালিজম’-এর ব্যাপকতা আগের যেকোনও সময়ের চাইতে বেশি– এটা মানতে আমার দ্বিধা নেই। সংবাদমাধ্যম যেহেতু এই সমাজ, রাষ্ট্রের অংশ, তাই তারা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হয়ে থাকবেন, এটা হতে পারে না। আর সব পেশার মতোই কিছু সাংবাদিকের মধ্যে অনৈতিক, বেআইনি এমনকি অপরাধমূলক কাজ করার প্রবণতা আছে নিশ্চয়ই। একজন সাংবাদিক যদি সত্যি সত্যি সাংবাদিকতার নামে ভয়ংকর কোনও অপরাধ করেন তাহলেও কি কোনও ক্ষমতাবান ব্যক্তি তাকে ফোনে এমন ভয়ংকরভাবে গালিগালাজ করতে পারেন?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও