আমরা কোন সংস্কৃতির কদর করছি?
ইদানীং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ' নিয়ে আলোচনা করতে গেলে দেখি, বেশিরভাগই পণ্ডিত রবিশংকর বা জর্জ হ্যারিসন সম্পর্কে সামান্যই জানে। প্রাগৈতিহাসিক, জিব্রাইলের ডানা, মোবি ডিক, থ্রি মাস্কেটিয়ারস, আরণ্যক, হারবার্ট- প্রভৃতি আলোচিত গল্প-উপন্যাসও বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী পড়েনি। সত্যজিৎ রায়ের উদয়ন পণ্ডিত চরিত্রটি তাদের কাছে অপরিচিত। তারা চেনে না 'প্রতিদ্বন্দ্বী' ছবির সিদ্ধার্থ বা 'পদাতিক'-এর সুমিতের মতো তরুণদের। 'শতরঞ্জ কি খিলাড়ী' ছবির দুই অভিজাত ব্যক্তি মির্জা সাজ্জাদ আলি আর মীর রওশন আলির মানসিকতা সম্পর্কেও জানে না তারা। হতাশ হয়ে দেখি- দেশের প্রথিতযশা চলচ্চিত্রকার আলমগীর কবির নির্মিত বিভিন্ন চলচ্চিত্র সম্পর্কেও এই সময়ের বহু তরুণ-তরুণীর ধারণা নেই।
হালে আলোচিত 'হিরো আলম' বিকৃত সুরে আর রবীন্দ্রসংগীত গাইবেন না- ক'দিন আগে পুলিশের কাছে এমন মুচলেকা দিয়েছেন। ভুল সুরে কেউ রবীন্দ্রসংগীত গাইলে তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা যায় কিনা এবং পুলিশ সেই ব্যক্তির কাছ থেকে মুচলেকা নিতে পারে কিনা, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। সঠিক সুরে রবীন্দ্রসংগীত না গেয়ে সেই ভিডিও কেউ সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করলেই ধরে নেওয়া যায় না- তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে রবীন্দ্রসংগীত বিকৃত করেছেন। হয়তো তাঁর রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার উৎসাহ আছে, কিন্তু সঠিক সুরে গাইতে পারেননি। এসব ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে অভিযোগ না করে তাঁকে বুঝিয়ে বলা উচিত, বিকৃত সুরে গান গাওয়ায় সৌন্দর্য নেই।